যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফ্রি ক্রুসসহ তিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ শুক্রবার তাদের বরখাস্ত করেন। এর মধ্যে রয়েছেন নৌ রিজার্ভের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল ন্যান্সি ল্যাকোর এবং নেভাল স্পেশাল ওয়ারফেয়ার কমান্ডের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মিল্টন স্যান্ডস।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফ্রি ক্রুসকে বরখাস্তের নির্দিষ্ট কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।ধারণা করা হচ্ছে, গত জুনে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর মার্কিন হামলার পর ডিআইএ-এর প্রাথমিক মূল্যায়নের কারণেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।ডিআইএ-এর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, মার্কিন হামলায় ইরানি স্থাপনাগুলোর সীমিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই প্রতিবেদন ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত। ট্রাম্প দাবি করে আসছিলেন, ওই হামলায় ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে।তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিরক্ষা বিভাগে চলমান পুনর্বিন্যাসের সর্বশেষ উদাহরণ।এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন সিনেটের গোয়েন্দা সংক্রান্ত কমিটির সহসভাপতি মার্ক ওয়ার্নার বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরখাস্তের ঘটনাগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের একটি বিপজ্জনক অভ্যাসের ইঙ্গিত। এখানে বস্তুনিষ্ঠ গোয়েন্দা বিশ্লেষণের পরিবর্তে ব্যক্তিগত আনুগত্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড ঘোষণা করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে ৩৭ জন বর্তমান ও সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে।পাশাপাশি তার অফিসের ৪০ শতাংশ জনবল ছাঁটাই এবং বছরে ৭০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সাশ্রয়ের ঘোষণা দেন গ্যাবার্ড। এই ঘোষণার দুই্দিন পরেই তিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বরখাস্তের খবর আসলো। এ বছরের শুরুতেই হেগসেথ ঘোষণা দিয়েছিলেন, ১ অক্টোবরের মধ্যে সক্রিয় দায়িত্বে থাকা চার-তারকা জেনারেল ও অ্যাডমিরালদের সংখ্যা ২০ শতাংশ এবং সামগ্রিক জেনারেল ও ফ্ল্যাগ অফিসারদের সংখ্যা ১০ শতাংশ কমানো হবে। এই ধারাবাহিক পদক্ষেপগুলো মার্কিন সামরিক কাঠামোতে গভীর পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট শুধু তার পছন্দের নেতৃত্ব বেছে নিচ্ছেন।তবে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটরা এটিকে সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিকীকরণ হিসেবে দেখছেন। ইতোমধ্যেই এই বছরেই ট্রাম্প প্রশাসন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড এবং মার্কিন বিমান বাহিনীর একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়েছে।