যৌনকর্মের জন্য শিশু পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ধনকুবের জেফ্রি এপস্টিন সম্পর্কিত নথিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম একাধিকবার উঠে আসায়, গত মে মাসেই তাকে সতর্ক করেছিলেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি। ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে আসে, হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বিষয়টি সরাসরি জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল বন্ডি। ওই বৈঠকে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তার ডেপুটি টড ব্লানশ।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ জুলাই শিশু পাচার ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন ধনকুবের জেফ্রি এপস্টিন। গ্রেপ্তারের এক মাসের মধ্যে নিউ ইয়র্কের একটি কারাগারে আত্মহত্যা করেন তিনি। সেই সময় প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প। অতীতে ট্রাম্প ও এপস্টিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে একাধিক ছবি ও ভিডিওতে প্রমাণ পাওয়া যায়।বহু আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি এপস্টিনের মাধ্যমে শিশু যৌনকর্মী পাচারের সুবিধাভোগী ছিলেন বলে দাবি করেছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। এপস্টিন সংশ্লিষ্ট নথিতে থাকা এসব ব্যক্তির নাম প্রকাশের দাবিও তুলেছেন অনেকেই। তবে এসব তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশে এখনো অনাগ্রহী ট্রাম্প প্রশাসন।ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সতর্ক করার পর গত ৮ জুলাই প্যাম বন্ডি ঘোষণা দেন, এপস্টিনের নথিগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে না।সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, ট্রাম্প ছাড়াও নথিগুলোতে আরো কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম রয়েছে।এদিকে, এপস্টিন সম্পর্কিত একটি মামলায় গ্র্যান্ড জুরির নথি প্রকাশের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন ফ্লোরিডার ফেডারেল বিচারক রবিন রোজেনবার্গ। বিচারক জানান, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এটি নথি প্রকাশের উপযুক্ত সময় নয়।তবে রহস্য কাটাতে, এপস্টিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গিলেইন ম্যাক্সওয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। আগামী ১১ আগস্ট টালাহাসির একটি ফেডারেল কারাগারে হাউস ওভারসাইট কমিটির চেয়ারম্যান জেমস কোমারের নেতৃত্বে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস কুন মার্কিন সংবাদমাধ্যম এমএসএনবিসি-কে বলেন, যেহেতু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম নথিতে রয়েছে, তাই গিলেইন ম্যাক্সওয়েলের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া হতে হবে একেবারে স্বচ্ছ। তার মতে, জনগণের আস্থা ফেরাতে হলে এ সাক্ষ্যের সম্পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করা উচিত ট্রাম্প প্রশাসনের।