খবরটা কখন পেলেন? শোনার পর আপনার তাৎক্ষণিক অনুভূতি কেমন ছিল?প্রথমে তাঁরা একবার ফোনকলে যোগাযোগ করে।তখন জানায়, একটি মেইল পাঠানো হবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) পেলাম সেই মেইল। কিন্তু কানের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে তালিকা না দেখা পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আজ (গতকাল) যখন সেটা দেখলাম, খুব ভালো লেগেছে।যখন ছবিটা জমা দিয়েছিলেন, তখন কি ভেবেছিলেন নির্বাচিত হবে?ও রকম কোনো ভাবনা একদমই ছিল না। আমরা শুধু একটি গুরুত্বপূর্ণ গল্প তুলে ধরতে চেয়েছিলাম। আইডিয়াটা খুব স্ট্রং মনে হয়েছিল। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাও বেশ ব্যতিক্রম ছিল।দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অনেক পরিশ্রম করে শুটিং করতে হয়েছে। আসলে আমাদের পরিকল্পনা ছিল, একটা ভালো ছবি বানানো। কিন্তু কখনো ভাবিনি এত বড় উৎসবে জায়গা পাব।
ছবিটার ভাবনা থেকে শুরু করে শুটিং—তলে তলে কবে এত কিছু সেরে ফেললেন?
বিষয়বস্তু সম্পর্কে এখন কিছুই বলা যাবে না। কান থেকে নিষেধ আছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে আশা করছি জানাতে পারব।
ছবিটার দৈর্ঘ্য কতটুকু? আর কারা অভিনয় করেছেন এতে?
দৈর্ঘ্য ১৫ মিনিট। এখানে খুব পরিচিত কেউ অভিনয় করেছে, এমন নয়। আল আমিন নামে এক কিশোর আছে, আর সোমা নামের একজন মহিলা ওর মায়ের চরিত্রে আছেন।
আপনার জীবনসঙ্গী মেহজাবীন চৌধুরীও অভিনয়ের মানুষ। এই আনন্দের খবরে তাঁর প্রতিক্রিয়া কেমন?
সে আমার কিউরেটর। যেকোনো সৃজনশীল কাজের বিষয়ে ওর সঙ্গে আলাপ করি। ও অনেক কঠিন কঠিন প্রশ্ন করে, আমাকে ধাতস্থ করে ফেলে! পরে আবার সেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করি। এতে আমার কাজটাও আরো ভালো হয়। এ ছবিটার কথাও যখন জানিয়েছি, তখনো অনেক কিছু জানতে চেয়েছে, যেগুলো ছবিটা বানানোর ক্ষেত্রে আমাকে হেল্প করেছে। আর এখন সুখবরটা শোনার পর তো মহাখুশি। ও সব সময়ই চায় আমার ভালো কিছু হোক। আমাকে নিয়ে বরাবরই প্রাউড ফিল করে, জানি না কেন। তবে এবার মনে হচ্ছে, একটা ভালো কাজ করেছি, যেটা নিয়ে গর্বিত হতে পারে।
কানের শর্টফিল্ম বিভাগে মূল প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নেওয়া ফিলিপাইনের ‘আগাপিটো’র সঙ্গেও তো আপনার সংশ্লিষ্টতা আছে…
হ্যাঁ। গত বছর যখন কানে গিয়েছি, ফিলিপাইনের একটা ছবি প্রযোজনার সূত্রে। ওই ছবির পরিচালক আরভিন এবং প্রযোজক ক্রিস্টিনের সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। সেই সুবাদে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, একটা যৌথ প্রতিষ্ঠান করব, যেখান থেকে আমাদের দেশের গল্পও বলব, ওদের গল্পও বলব। পরে ‘ক্যাটালগ’ নামে একটা কম্পানি চালু করি। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই আমার ‘আলী’ এবং ওদের ‘আগাপিটো’ প্রযোজনা করা হয়েছে। এটা আরভিন পরিচালনা করেছে। আমার দুই ঘণ্টা পর ওদের কাছেও কল যায়, ওদের ছবিটাও মূল প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছে। মনে হচ্ছে, আমরা এক শতে দুই শ পেয়ে গেছি। স্বর্ণপামের জন্য যেহেতু এর আগে বাংলাদেশের কোনো ছবি লড়েনি; সুতরাং এটা একটা গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট বলা যায়।
নির্মাণের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই যুক্ত। এবার তো কান অব্দি পৌঁছে গেলেন। পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি নিয়ে ভেবেছেন কিছু?
পরিকল্পনা আছে। কিভাবে ফিচার ছবি করব, এটা নিয়ে প্রযোজক এবং আমার আইডিয়া ধরে পরিকল্পনামাফিক এগোতে চাই। সেই স্বপ্নের কাছাকাছি যাওয়ার জন্যই মূলত শর্টফিল্মটা বানিয়েছি। কারণ দিনশেষে যেকোনো নির্মাতার চূড়ান্ত স্বপ্ন ফিচার ছবি। প্রস্তুতি পর্যায়ের কাজ তো চলছে। তবে নির্দিষ্ট করে সময়টা এখন বলা যাচ্ছে না আরকি।