দেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতীক চট্টগ্রাম বন্দর আজ বিদেশি স্বার্থের কর্পোরেট দখলদারিত্বের হুমকির মুখে। দেশের জনগণের ঘাম-রক্তে গড়ে ওঠা এই বন্দরকে বিদেশি শক্তির হাতে তুলে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অবমাননা।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন উত্তরা পূর্ব শাখা মনে করে— রাষ্ট্রের কৌশলগত সম্পদ, বিশেষ করে বন্দর, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ও জ্বালানি খাত বিদেশি প্রভাবাধীন হলে বাংলাদেশ কখনোই প্রকৃত অর্থে স্বাধীন ও স্বনির্ভর রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবে না। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করবে এবং শ্রমজীবী মানুষের ওপর নতুন শোষণের বোঝা চাপিয়ে দেবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন উত্তরা পূর্ব শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম সিকদার বলেন —
“আমরা ইন্টারিম সরকারকে বারংবার সতর্ক করছি, চট্টগ্রাম বন্দর কোনোভাবেই বিদেশি শক্তির হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই ইন্টারিম সরকার জাতীয় সম্পদ বিদেশি শক্তির হাতে তুলে দেওয়ার নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে। জনগণের সম্পদ বিক্রি করে তারা দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং জনগণের স্বার্থকে ত্যাগ করছে।
চট্টগ্রাম বন্দর শুধু অর্থনৈতিক কেন্দ্র নয় — এটি বাংলাদেশের অস্তিত্বের অংশ। এই বন্দর বিদেশিদের হাতে গেলে তা শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক নির্ভরতার নতুন শৃঙ্খলে দেশকে আবদ্ধ করবে।”
তিনি আরও বলেন,
“বাংলাদেশের জনগণ জানে, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে টেকসই করার পরিবর্তে শাসকগোষ্ঠী বারবার বিদেশি ঋণ, বিনিয়োগ ও দখলদারিত্বের ফাঁদে দেশকে জড়িয়ে ফেলেছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থা, বাণিজ্যিক সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় নিরাপত্তা সবকিছুই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাই এখনই দেশের ছাত্র-যুব সমাজকে সংগঠিত হয়ে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন উত্তরা পূর্ব শাখা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানায়—
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি মালিকানায় দেওয়ার পরিকল্পনা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জাতীয় সম্পদ রক্ষায় স্বচ্ছ, জনগণনির্ভর নীতি গ্রহণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি কৌশলগত সম্পদের ওপর জনগণের গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়—
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সর্বদা দেশের শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক ও শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে ছিল, আছে এবং থাকবে। দেশের বন্দর, নদী, জমি, শ্রমিক ও সম্পদ রক্ষার সংগ্রামই এখন সময়ের দাবি।