সবুজে ঘেরা সেই আরেফিননগরে চসিক যখন ভাগাড় গড়ে তোলে তখন ময়লার দুর্গন্ধে অনেকেই এলাকা ছাড়ে। এতে বিপদে পড়ে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী। তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় বাপ-দাদার ভিটিতে পড়ে আছে। কিন্তু মাদকের ভয়াল থাবা তাদের পরবর্তী বংশধরদের তিলে তিলে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তিন ডজনের বেশি সিসি ক্যামেরায় তদারকি করা হয় পুলিশের অভিযান কিংবা গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ করার বিষয়টি। তাদের সন্দেহ হলে যে কাউকে তারা জেরা করে নাজেহাল করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে ড্রামে ভরে কবরের ভেতরে লুকিয়ে রাখে মাদক। সর্বশেষ অভিযানে মনিকা গ্রেপ্তার হলে তাঁর দেওয়া তথ্যে পুরনো কবর থেকে ড্রাম ভর্তি ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ।
এই এলাকায় মাদকের বিস্তারের পাশাপাশি গড়ে তোলা হয়েছে একদল কিশোর গ্যাং, যারা মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়িয়ে এলাকায় ভয়ভীতি ছড়ায় এবং কেউ প্রতিবাদ করলে হামলা চালায়।
কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসা সম্পর্কে সিএমপির জিরো টলারেন্স জানিয়ে উপকমিশনার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেখানে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে মনিকা গংয়ের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবার যদি মাথা চাড়া দেয় আবারও অভিযান চালানো হবে।’চসিকের ভূ-সম্পত্তি দেখাশোনা করেন মেয়রের একান্ত সচিব মো. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জায়গা দখলের বিষয়টি সম্পর্কে খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চসিকের উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্ম্মা বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা বিভাগে হরিজন শ্রেণির মানুষ কাজ করে। তাদের জন্য কিছু শিথিলতা আছে। তবে সেটা কাজের সময় নয়।’
চসিকের জায়গা নিজেদের কেনা দাবি করে মাদকচক্রের অন্যতম প্রধান মুক্তা বেগম বলেন, ‘এটা সিটি করপোরেশনের বলা হতো। কিন্তু আমরা জসিম সাহেবের কাছ থেকে ক্রয় করেছি।’ সেই জসিমের নাম্বার চাইলে মুক্তা বলেন, ‘জসিম সাহেবের হার্টে রিং লাগানো হয়েছে। উনি কথা বলতে পারবেন না।’ মাদক মামলায় আটক হয়ে তাঁর পরিবারের ছয়জন কারাগারে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে মুক্তা বলেন, ‘আমার স্বামী হযরত আলী, তার মা, আমার মেয়ে, মেয়ের জামাই, বোন সেলিনা এবং তার ছেলে কারাগারে আছে।’
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাসযোগ্য নিরাপদ নগর গঠনে মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব। চসিকের জায়গায় কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকতে পারে না।’