যুক্তরাষ্ট্রের একটি আপিল আদালত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা অধিকাংশ শুল্ক অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এই রায় বৈদেশিক নীতিতে বড় ধরনের আইনি চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সার্কিট কোর্ট অব আপিলস ৭-৪ ভোটে এক রায়ে জানান, ট্রাম্পের ‘পারস্পরিক’ শুল্ক এবং চীন, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর আরোপিত শুল্কসমূহ আইনের পরিপন্থী এবং ‘অবৈধ’।
ট্রাম্প এসব শুল্ককে আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (আইইইপিএ)-এর আওতায় বৈধ দাবি করলেও আদালত তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।আদালত বলেছেন, এই আইনে ট্যারিফ আরোপের কোনো উল্লেখ নেই এবং এটি প্রেসিডেন্টকে শুল্ক আরোপের সীমাহীন ক্ষমতা দেয় না। শুল্ক আরোপের ক্ষমতা কংগ্রেসের এখতিয়ারেই রয়ে গেছে। রায়টি আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর হবে না, যাতে ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারে।এদিকে এই রায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।তিনি ট্রুথ স্যোশালে বলেছেন, ‘এই রায় যদি বহাল থাকে, তা আমেরিকার ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আদালত ভুল বলেছেন যে, আমাদের শুল্ক বাতিল করা উচিত, কিন্তু তারা জানে আমেরিকা শেষ পর্যন্ত জয়লাভ করবে।’ ট্রাম্প দাবি করেন, ট্যারিফ বাতিল হলে যুক্তরাষ্ট্র আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তা হবে জাতির জন্য বিপর্যয়কর।কয়েকটি ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্য এই মামলাগুলো দায়ের করেছিল।তারা ট্রাম্পের এপ্রিল মাসের নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছে, যেখানে তিনি প্রায় সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন। এ ছাড়া ‘পারস্পরিক’ হারে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এই রায়ের মাধ্যমে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের ওপর আরোপিত বিশেষ কিছু শুল্ক বাতিল হয়েছে। তবে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্কগুলো এই রায়ের আওতায় পড়ে না, কারণ সেগুলো আলাদা আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই রায়ের ফলে মামলা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুপ্রিম কোর্ট বারবার এমন বড় নীতিগত পদক্ষেপ বাতিল করেছেন, যেগুলো কংগ্রেসের স্পষ্ট অনুমোদন ছাড়াই প্রেসিডেন্ট চালু করেছিলেন। বর্তমান সুপ্রিম কোর্টের নয়জন বিচারকের মধ্যে ছয়জন রিপাবলিকান মনোনীত, যার মধ্যে তিনজন ট্রাম্প নিজে মনোনীত করেছেন। তাই এই মামলাটি কেবল ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির ভাগ্য নির্ধারণই নয়, বরং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করতে পারে।