যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপল অতিরিক্ত ১০০ বিলিয়ন ডলার (৭৫ বিলিয়ন পাউন্ড) বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত এসেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে, যিনি এর আগে কম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে আনার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের যন্ত্রাংশ উৎপাদন বাড়াতে ব্যয় হবে এবং এটি অ্যাপলের পূর্ব ঘোষিত চার বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির পরিপূরক হবে।এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অ্যাপলকে নাম ধরে হুমকি দিয়েছিলেন যে, যদি তারা আইফোন উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে না আনে, তবে তাদের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।গত সপ্তাহে অ্যাপলের সিইও টিম কুক বলেন, তারা আগের প্রতিশ্রুতি অনুসরণ করছে এবং আরো কিছু করার পরিকল্পনা করছে, যাতে আসন্ন শুল্কের ঢেউ এড়ানো যায়।হোয়াইট হাউজে এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় ট্রাম্প বলেন, এই বিনিয়োগের আওতায় অ্যাপল তাদের দেশের সাপ্লাই চেইনে বিপুল পরিমাণ ব্যয় বৃদ্ধি করবে, যার মধ্যে রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন ডেটা সেন্টার তৈরি এবং কেন্টাকির হ্যারিসবার্গে স্মার্ট গ্লাস উৎপাদনের একটি লাইন স্থাপন, যা আইফোন ও স্মার্টওয়াচে ব্যবহৃত হবে।তিনি আরো জানান, যারা যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করবে, তারা ১০০% চিপ ও সেমিকন্ডাক্টর শুল্ক এড়াতে পারবে। তবে ট্রাম্প নতুন শুল্কের বিস্তারিত জানাননি।তবে বলেন, অন্যান্য কম্পানিও যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করলে কর ছাড় পেতে পারে।ঘোষণার সময় টিম কুক বলেন, অ্যাপলের আগের ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ইতোমধ্যেই ইতিবাচক ফল দিচ্ছে। নতুন এই অর্থায়ন অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়াবে। পাশাপাশি কুক ট্রাম্পকে একটি কাঁচের ভাস্কর্য উপহার দেন।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অ্যাপলের সরবরাহ ব্যবস্থা রাতারাতি বদলানো সম্ভব নয়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ঘোষণার পরদিন অ্যাপলের শেয়ার ৫% এর বেশি বেড়ে যায়।হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্পের নীতিগুলোর ফলে কম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে আরো বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হচ্ছে। এই বিনিয়োগ মার্কিন অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করবে বলেও জানানো হয়।চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অ্যাপল সরবরাহ শৃঙ্খলা বদলাতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে তারা ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে পণ্য আমদানি করছে, যেসব দেশে তুলনামূলকভাবে শুল্ক কম। তবুও এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে অ্যাপলকে ৮০০ মিলিয়ন ডলার শুল্ক দিতে হয়েছে এবং আরো ১.১ বিলিয়ন ডলার শুল্ক দিতে হতে পারে।বিশ্লেষক পাওলো পেসকোর মতে, টিম কুক জটিল সময়ে অ্যাপলকে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছেন। তবে পুরো উৎপাদন ব্যবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা এখনো একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ।