আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা গত ২০ বছরে এই প্রথমবারের মতো ইরানকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিরস্কার করেছে পারমাণবিক পর্যবেক্ষকদের সহযোগিতা না করায়। এরপরই ইরান জানিয়েছে, তারা তৃতীয় একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র স্থাপন করবে এবং আরো উন্নত সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার শুরু করবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, হামলায় দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামিসহ দুইজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং আরও একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।তিনি কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘ইসরায়েল তাদের নিকৃষ্ট ও রক্তাক্ত চরিত্র আবারও প্রকাশ করেছে। এই হামলার মাধ্যমে তারা এমন এক ভাগ্যের দিকে এগোচ্ছে, যার পরিণতি হবে তিক্ত ও অবশ্যম্ভাবী।’রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে খামেনি বলেন, ‘বিশ্ববাসীর সামনে আজ ইসরায়েলের আসল চেহারা আরও নগ্ন হয়ে গেছে। তারা আবাসিক এলাকাকে লক্ষ্য করে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে মানবতার প্রতি তাদের অবজ্ঞা প্রমাণ করেছে।এদিকে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবোলফাজল শেকারচি বলেন, ‘এই জায়নিস্ট হামলার যথাযথ জবাব অবশ্যই দেবে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে এর চরম মূল্য দিতে হবে।’ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইরানি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।এদিকে শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েল রাজধানী তেহরানে পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং কিছু এলাকায় ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে এক ভয়াবহ সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে। ইরান যে কড়া প্রতিক্রিয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তা বাস্তবে রূপ নিলে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, এই সংঘর্ষ শুধু ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক জ্বালানিবাজার, কূটনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।