বিশ্বব্যাপী লিভার ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। প্রকাশিত এক গবেষণায় মঙ্গলবার এ সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে স্থূলতা, মদ্যপান ও হেপাটাইটিসের মতো প্রতিরোধযোগ্য ঝুঁকিগুলোর বিরুদ্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিলে অনেক ক্ষেত্রেই এ রোগ এড়ানো সম্ভব হবে।
ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত গ্লোবাল ক্যান্সারে অবজারভেটরির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে ষষ্ঠ অবস্থানের লিভার ক্যান্সারে প্রতিবছর নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আট লাখ ৭০ হাজার।তবে ২০৫০ সালের মধ্যে তা বেড়ে ১৫ লাখ ২০ হাজারে পৌঁছবে।গবেষণা বলছে, মৃত্যু হারের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে থাকা এ ক্যান্সারে ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩ লাখ ৭০ হাজার মানুষের প্রাণ যেতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার ক্যান্সারের প্রতি পাঁচ রোগীর মধ্যে তিনজনই চাইলেই এ রোগ থেকে বাঁচতে পারেন। মূল ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে মদ্যপান, হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস এবং ‘এমএএসএলডি’ (মেটাবলিক ডিসফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়াটোটিক লিভার ডিজিস) নামের এক রোগ।এই রোগে ওজন বাড়ার কারণে লিভারে চর্বি জমা হয়। পূর্বে এটিকে ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিস’ নামে ডাকা হতো।২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে প্রকাশিত এ গবেষণায় আরো বলা হয়, ২০৫০ সালেও হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস লিভার ক্যান্সারের প্রধান কারণ হিসেবে থাকবে। জন্মের পর পর টিকা দেওয়া হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর হলেও সাব-সাহারা আফ্রিকাসহ অনেক নিম্ন আয়ের দেশে এখনো টিকাদানের হার খুবই কম।গবেষকদের আশঙ্কা, টিকাদানের হার না বাড়লে ২০১৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত হেপাটাইটিস বি-তে বিশ্বজুড়ে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।অন্যদিকে ২০৫০ সাল নাগাদ লিভার ক্যান্সারের ২১ শতাংশ কারণ হবে মদ্যপান, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া ওজন বাড়ার কারণে লিভারে জমে থাকা চর্বি থেকে সৃষ্ট ক্যান্সারের হার বেড়ে ১১ শতাংশে পৌঁছবে, যা এখনকার চেয়ে ২ শতাংশ বেশি।গবেষণাটি বলেছে, বিশ্বজুড়ে এখনই লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধে জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।বিশেষ করে যারা স্থূলতা বা ডায়াবেটিকে আক্রান্ত, তাদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি বেশি। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ায় এ বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।