জামায়াতও রোডম্যাপ চায়
নির্বাচন কবে হবে, সেটা স্পষ্ট করা দরকার বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানও। বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে জনগণের বড় ধরনের ভোগান্তি ছাড়া একটি স্বস্তিজনক সময়ে নির্বাচন হতে পারে। তিনি বলেন, ‘সবাই এগিয়ে এলে অর্থবহ সংস্কারের মধ্য দিয়ে অর্থবহ নির্বাচন হতে পারে। সবাই সেই দিনের অপেক্ষায়।’গতকাল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাইরে বেরিয়ে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন।সমাজে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল, আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা কেটেছে—উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘জামায়াত এর স্থায়ী নিষ্পত্তি চায়। দুটি রোডম্যাপ ঘোষণা করলেই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ। এই দুটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।’জামায়াতের আমির মনে করেন, সময়টি কখন, সেটির একটি রোডম্যাপ (পথনকশা) দরকার। পাশাপাশি সংস্কারেরও রোডম্যাপ প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। আবার সব সংস্কার এই সরকার করতে পারবে না। মাত্র পাঁচটি সংস্কারে সরকার হাত দিয়েছে। সেগুলো সন্তোষজনকভাবে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।’সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির জানান, তাঁরা কোনো উপদেষ্টার পদত্যাগ চাননি।অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো নির্বাচনের সময়ের কথা বলেননি। তিনি শুনেছেন।’ তাঁর কথা তাঁদের কাছে ইতিবাচক মনে হয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘তিনি একটি অর্থবহ নির্বাচন চান।’বৈঠকে জামায়াতের আমিরের সঙ্গে ছিলেন দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
হাসিনার আমলের সব নির্বাচন বাতিল চায় এনসিপি
শেখ হাসিনার আমলে হওয়া সব নির্বাচন (জাতীয় ও স্থানীয়) আনুষ্ঠিকভাবে অবৈধ ঘোষণা করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহবান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।গতকাল শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান এনসিপির আহবায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচন করেছিলেন, যেখানে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। রাতের ভোট ও ডামি প্রার্থীর ভোট হয়েছে।’শেখ হাসিনার আমলের নির্বাচনগুলো প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তখন এসব নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছিল উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সেই নির্বাচনগুলো আবার আদালতে নিয়ে গিয়ে এক ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। সেই বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেই আগের নির্বাচনগুলো আইনগতভাবে অবৈধ ঘোষণা যাতে করা হয়।’নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর এনসিপি আস্থা রাখতে পারছে না উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ইসি পুনর্গঠন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন যাতে দ্রুত আয়োজন করা হয়, তা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি আমরা।’নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই গণহত্যার বিচার, জুলাই সনদ এবং গণপরিষদ ও আইন সভা নির্বাচনের সমন্বিত রোডম্যাপ একত্রে ঘোষণা করতে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি।’প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন নাহিদ ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।আজ রবিবার প্রধান উপদেষ্টা আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।