পঞ্চগড়ের সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলার দুইটি সীমান্ত দিয়ে ১৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে তেঁতুলিয়ার শুকানি সীমান্ত দিয়ে সাতজন ও সদর উপজেলার বাঙ্গালপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠায় তারা। পরে সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি।
বিজিবি সূত্র জানায়, আটকদের মধ্যে ৯ জন নারী ও ৮ জন পুরুষ রয়েছেন।তারা বাংলাদেশের যশোর, বরিশাল, খাগড়াছড়ি, নরসিংদী, সিলেট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ ও কক্সবাজার এলাকার বাসিন্দা। পরে তাদের পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটকরা জানান, তারা ভারতের মহারাষ্ট্র, উড়িষ্যাসহ বিভিন্ন এলাকায় দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাদের কেউ কেউ ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছিলেন ভারতে।কেউ আবার সেখানেই বিয়ে করে সংসার বসিয়েছিলেন। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পরে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপোড়ন শুরু হলে ভারতে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের ধরতে অভিযান শুরু করে ভারতীয় পুলিশ। তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধরা হচ্ছে তাদের। এমনকি যারা বাংলাদেশিদের ধরিয়ে দেয় তাদের দেওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার রুপি পর্যন্ত পুরষ্কারও।
আটকদের একজন নুরবানু বলেন, ‘আমি ১৩ বছর ভারতে ছিলাম। সেখানে আমার বিয়ে হয়েছে। আমার একটি মেয়েও আছে সেখানে। তারপরও তারা আমাকে আটক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। কোনো কিছুই সঙ্গে আনতে দেয়নি।এমনকি আমার মেয়েটিকেও না।’
আটকদের আরেকজন শাহারুন বেগম বলেন, ‘ভারতে এখন একজন বাংলাদেশিকে ধরিয়ে দিলেই ৫০ হাজার রুপি দেওয়া হয়। সেখানে ব্যাপক ধর-পাকোর চলছে। আধার কার্ডসহ সব কাগজপত্র থাকার পরেও তারা আমাদেরকে ধরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।’
আছিয়া আক্তার নামের আরেকজন বলেন, ‘আমাদেরকে ৬ জুলাই আটক করে পুলিশ। তারপর একটি হোমে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে বিমানে করে শিলিগুড়িতে এনে বিএসএফের ক্যাম্পে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে বাতি নিভিয়ে সীমান্তের দরজা খুলে আমাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় তারা।’
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘আটকদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ..