তিনি বলেন, ‘আমরা উদার বাণিজ্যের দিকে যেতে চাই কারণ, আমরা শুধু রপ্তানিকে সমর্থন করতে চাই না, আমরা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমদানি করতে চাই। কারণ আমাদের আমদানি একটি বাস্তবতা।’
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এফটিএ, পিটিএ, ইপিএ এবং সিইপিএ-তে সব সমস্যা মোকাবেলা করার সময় আমরা কিভাবে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে পারি তা নিয়ে কাজ করছি।
‘কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত কয়েক বছরে কোনো চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা ছিল না। এমনকি ন্যূনতম দায়িত্বের কোনো জায়গাও ছিল না। কিন্তু এখন যখন আমরা ২০২৬ সালে উদার অর্থনীতির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি, তখন স্থানীয় বিনিয়োগ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারি আমাদের পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছি, যাতে আমাদের মসৃণ উত্তরণ কৌশল (এসটিএস) বাণিজ্য উদ্যোগ ও সক্ষমতায় ঘাটতি না হয়। সার্বিকভাবে সংশ্লিষ্ট সব দিক সামনে রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এফটিএ উইং, ডব্লিউটিও উইং এবং রপ্তানি উইং সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসব বিষয় বোঝার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার, অর্থনীতিবিদ ও থিংক ট্যাংকের সঙ্গে আলোচনা, কোরিয়া ও জাপান সফর এবং তাদের বাণিজ্য উপদেষ্টাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছি।
শেখ বশিরউদ্দীন অবশ্য বলেছেন, ‘গত পাঁচ বছরে যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিল, তা তারা করছেন। কিন্তু সেই সময় একেবারেই নষ্ট হয়েছে এবং অর্থনীতি সংকটে পড়তে বাধ্য হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বাণিজ্য উদারীকরণ করি, তাহলে আমাদের সংবেদনশীলভাবে স্থানীয় বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করার পাশাপাশি পরিণতির কথা বিবেচনা না করে কিছু না করার বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘২০২৬ সালের নভেম্বরে দেশের এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা হারাবে।’
তিনি বলেন, ‘আগে আমরা পাঁচ বছর সময় পেয়েছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেই সময়টা নষ্ট করেছি।’
২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)। যা ১ জুলাই ২০২২ তারিখে কার্যকর হয়। বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশ কেবল কাগজে-কলমে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি যদি বলি এটা একেবারেই ভুয়া ছিল, তাহলে ভুল হবে না। কারণ এরপর ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ কমে গিয়েছিল এবং পিটিএ শিরোনাম ছাড়া তাতে নতুন কিছু ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘এটি একই শুল্ক কাঠামোতে একটি পিটিএ শিরোনাম দিয়ে করা হয়েছিল।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘পরবর্তীকালে তারা যখন সরকারের দায়িত্ব নেয়, তখন পিটিএ এবং এফটিএ মোকাবেলা করা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’