কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ১৯২ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটি গত বছরের চেয়ে ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বেশি। তবে মোট বাজেটের প্রায় ৭৭.৭৭ শতাংশই খরচ হবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পেনশনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য উদ্ভাবন ও গবেষণা হলেও বাজেটে উদ্ভাবনে ব্যয় নেই বললেই চলে।এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে মাত্র তিন লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ০.০১৬ শতাংশ। এ ছাড়া সন্তোষজনক বরাদ্দ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা, পরিবহনসহ শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতেও। কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি ছাত্রকল্যাণ তহবিল বাবদও।
বিশ্ববিদ্যালয় অর্থ ও হিসাব শাখা সূত্রে জানা যায়, অনুমোদিত বাজেটের মধ্যে ১৮১ কোটি ৭২ লাখ টাকা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় দেখানো হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতিবারের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও বিশেষ সুবিধায়। এ খাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২২ কোটি সাত লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ৬৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। পেনশন খাতে ২৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ১৪.২৬ শতাংশ।
কেবল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ, পেনশন ও বিশেষ সুবিধা প্রদানে খরচ হবে বাজেটের ৭৭.৭৭ শতাংশ।
এদিকে, এবারের বাজেটেও গুরুত্বহীন রয়েছে গবেষণা, চিকিৎসা ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো। গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে বরাদ্দ মোট ধরা হয়েছে তিন কোটি ১৩ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। যা মোট বাজেটের ০.০১৬ শতাংশ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তায় ৩৮ লাখ টাকা রাখা হয়েছে, যা মোট বাজেটের ০.১৯ শতাংশ।
বাজেটে পণ্য ও সেবা (সাধারণ ও মেরামত) ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যন্ত্রপাতি অনুদান খাতে এক কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ৯৮ শতাংশ। যানবাহন বাবদ ৫২ লাখ টাকা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান বাবদ ৪০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য মূলধন অনুদান বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ৫৫ লাখ টাকা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাজেটে উদ্ভাবনে যে অর্থ রাখা হয়েছে, তা দিয়ে কিছুই করা সম্ভব নয়। এটি উদ্ভাবন খাতে বাজেট না থাকার মতোই। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট অন্য খাতগুলোতেও যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ, তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের চাহিদা কোনোভাবেই পূরণ সম্ভব নয়।
অর্থ ও হিসাব শাখার পরিচালক আনার পাশা বলেন, গবেষণা ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে চাইলেই অনেক বেশি চাহিদা দিতে পারি না। ইউজিসি আগের বাজেটের সঙ্গে তুলনা করে বরাদ্দ দিয়ে থাকে। তাই আমরা চাহিদা দেওয়ার সময় আগের তুলনায় বাড়িয়ে থাকি। ইউজিসি সেখান থেকে কাটছাঁট করে বরাদ্দ দেয়। এবার বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা আগের তুলনায় কঠোর ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইউজিসিকে এক বছর আগেই বাজেট চাহিদা দিতে হয়। এই বাজেট আগের প্রশাসনের দেওয়া। সামনে আমরা যদি প্রশাসনে থাকি, তাহলে অবশ্যই শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ..