যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি আমদানির পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ও পরিশোধিত জ্বালানি তেল মিলিয়ে বছরে প্রায় ১.২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি ডলারের আমদানি বৃদ্ধি করবে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের ঘাটতি পূরণেই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জ্বালানি বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৬টি এলএনজি কার্গো আমদানি করবে, যার মধ্যে এক্সেলেরেট এনার্জি থেকে ১০টি রয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র থেকে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির বার্ষিক খরচ ৭০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত এলএনজি স্কট মার্কেট থেকেও সংগ্রহ করা হবে।এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্কদ বিভাগ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা আগামী বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বার্ষিক প্রায় ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের এলএনজি, এলপিজি এবং পরিশোধিত জ্বালানি সংগ্রহ করব।’ জানা গেছে, বর্তমানে মার্কিন বহুজাতিক কম্কানি শেভরন বাংলাদেশে তার কার্যক্রম থেকে বার্ষিক প্রায় ৪২০ মিলিয়ন ডলার আয় করে।তবে এটি ‘সার্ভিস ট্রেড’-এর আওতায় ধরা হয়, ফলে পণ্যভিত্তিক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পরিসংখ্যানে যোগ হয় না।দেশে চাহিদা বাড়ায় এলপিজি আমদানিও দ্রুত বাড়ছে। ওমেরা এলপিজির পরিচালক আজম জে চৌধুরী বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি থেকে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে দুই লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি এলপিজি আমদানি হয়েছে। আমরা প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নিশ্চিত করার জন্য প্রধান মার্কিন সরবরাহকারীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছি।লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা হলে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার বেশির ভাগ এলপিজি চাহিদা পূরণ করতে পারে।’জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, ‘জ্বালানি আমদানি প্রতিযোগিতামূলক শুল্কে সুরক্ষিত করা উচিত। অন্যান্য দেশের তুলনায় দাম বেশি হলে এটি জনসাধারণের অসন্তোষের কারণ হতে পারে। বাংলাদেশ বাণিজ্য সুবিধার বিনিময়ে, বিশেষ করে বাংলাদেশি পোশাক আমদানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে লাভবান হতে পারে।’ বাংলাদেশ সম্ক্রতি একাধিক আলোচনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করতে পেরেছে।আরো কমার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছিল ১২.৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ ৮.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, ২.৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি করেছে।