সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তিনি সেখানে এটাও বলেছেন, আগামী সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে মার্কিন কর্মকর্তারা বৈঠকে মিলিত হবেন। কিন্তু তিনি এই বৈঠকের স্থান ও সময় সম্পর্কে কিছুই বলেননি।অন্যদিকে ইরানের পরমাণু প্রকল্পের স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার পরের দিন (২৩ জুন) ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।গত মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ দেশটির কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাও যুদ্ধবিরতির ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন।তবে এখনো যুদ্ধবিরতি নিয়ে খানিকটা অস্বস্তি রয়ে গেছে। কারণ ইরানের যেকোনো ইস্যুতে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অথচ যুদ্ধবিরতির দুই দিন পেরিয়ে গেলেও খামেনি এই ইস্যুতে প্রকাশ্যে বা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। ফলে এই মুহূর্তে ইরান এবং ইরানের বাইরে সবারই মনোযোগের কেন্দ্রে আছেন তিনি।সবাই জানতে চাইছেন, খামেনি আদৌ এই যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছেন কি না।তবে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি বিষয়ক কথাবার্তা সত্যিকারের কূটনৈতিক অগ্রগতি, নাকি তা আরেকটি ‘ট্রাম্পীয় মরীচিকা’, তা সময়ই বলে দেবে।প্রশ্ন হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ করতে পেরেছে? নাকি এটি তাঁর আরেকটি ‘ধ্রুপদী বিভ্রম’? এই সংঘাতের একটি অসমাপ্ত দিকও রয়েছে। সেটা হলো—ইরানের হাতে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ থাকার কথা বলা হচ্ছে, যা দ্রুত বোমায় রূপান্তর করা সম্ভব। ফলে আরো বড় একটি সংকট সামনে অপেক্ষা করছে কি না সেই প্রশ্নের সুরাহাও এখনো হয়নি।সিএনএন বলেছে, ইরানের সামরিক নেতারা এবারের সংঘাত থেকে নতুন একটা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। তা হলো—ইসলামী বিপ্লবকে বাঁচাতে হলে তাঁদের একমাত্র পথ একটি পারমাণবিক বোমা বানিয়ে ফেলা। কারণ ইরানের তরফে এখনো এমন বার্তাও আসেনি যে তারা নতুন চুক্তিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার পথ থেকে সরে দাঁড়াবে।আর্মড কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কেলসে ডাবেনপোর্ট বলেন, ‘ইরান তার ইউরেনিয়ামের মজুদ গোপন কোনো স্থানে সরিয়ে ফেলার যথেষ্ট সময় পেয়েছিল এবং সম্ভবত সেটিই তারা করেছে।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এই গোপন ইউরেনিয়াম যদি নতুন সেন্ট্রিফিউজে ঢোকানো হয়, তাহলে ইরান তিন সপ্তাহের মধ্যে দশটি বোমা বানিয়ে ফেলতে পারে।’
যুদ্ধবিরতির পর কী ঘটতে পারে? : মূল প্রশ্ন হলো, ‘এরপর কী?’ প্রশ্নটির উত্তর এখনো অজানা এবং অপ্রত্যাশিত। কারণ ট্রাম্প মূলত মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থাকে পাশে রেখে পরামর্শ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজ হোয়াইট হাউস থেকে পরিচালিত শীর্ষ সহযোগীদের একটি খুব ছোট দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন।মধ্যপ্রাচ্যে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মনোনীত মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার ভাইস অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার মঙ্গলবার আইন প্রণেতাদের বলেছেন, আমেরিকান হামলা সত্ত্বেও ইরানের এখনো ‘উল্লেখযোগ্য কৌশলগত ক্ষমতা’ রয়েছে। ইরানিরা এখনো বিশ্বব্যাপী মার্কিন সেনা এবং আমেরিকানদের জন্য হুমকিস্বরূপ কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কুপার উত্তর দিয়েছিলেন, ‘তা আছে।’