রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নকশা অনুমোদন সংক্রান্ত ইসিপিএস সার্ভার হ্যাক করে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে জাল-জালিয়াতি করে নকশা অনুমোদন করার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম, সজীব ও মুকুল।জানা গেছে, রাজউক কর্তৃক দায়েরকতৃ মামলার এজাহারনামীয় ২১নম্বর আসামী জালিয়াতির সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান ‘নীলাভ নকশাঘর’ এর মালিক জাহাঙ্গীর।এছাড়া মামলার ২২ ও ২৩নম্বর আসামী সজীব ও মুকুল। উল্লেখ্য, গত ১৯ মে, রাজউকের ইসিপিএস সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে মাত্র ১৭ মিনিটে একটি ভবনের অনুমোদন পাশের ঘটনাটি নজরে আসে রাজউক কর্তৃপক্ষের। জলাভূমি ও হাইট রেস্ট্রিকশন থাকা ভূমিতে ১৫ তলা বিশিষ্ট ১৮৫ ইউনিট এর এই সুউচ্চ ভবনটির নকশা সকল বিধিকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাশ করিয়ে নেয় অনুপ্রবেশকারীরা।পরবর্তীতে রাজউক কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা জানতে পারার পর প্রাথমিক তদন্তে একই উপায়ে আরও তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদন শেষ পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় পায়।তৎক্ষণাৎ সার্ভারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে রাজউক এর পক্ষ থেকে এবং মতিঝিল থানায় সেদিনই একটি জিডি করা হয়।ওই পাসকৃত নকশার সূত্র ধরে রাবেয়া বারী নামক এক প্রকৌশলীর সন্ধান পায় রাজউক, যার স্বাক্ষর নকশাগুলোতে পাওয়া যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মতিঝিলের নীল নকশা নামক একটি কম্পিউটারের দোকানের এবং সেখানকার এক কর্মচারী স্বপনের নাম।তারই প্রেক্ষিতে রাজউক এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদার এর নেতৃত্বে গত ২২ মে, একটি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয় মতিঝিলস্থ নীল নকশা নামক দোকানটিতে।অভিযানে দোকানটির সাথে অননুমোদিত নকশা অনুমোদনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। একইসাথে দোকানটির মালিক এনামুল এর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রাজউক এর নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও দোকানের কয়েকটি কম্পিউটারে উক্ত অবৈধ ভবন গুলোর নকশা পাওয়া যায়। যা থেকে দোকানের মালিক এনামুল ও কর্মচারী স্বপনের সম্পৃক্ততা মিলে।অভিযানের সময় তাদের কাওকেই পাওয়া না যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মচারীদের পুলিশ আটক করে।এমন ঘটনার পর রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেন এবং তার নির্দেশনায় ৬ জুন রাজউক বাদী হয়ে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ,২০২৫’ এর ১৭(২)(ক)/১৭(২)(খ)/১৮(২)(ক)/১৮(২)(খ)/১৮(২)(গ)/২৭ ধারা তৎসহ দন্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারায় উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর উত্তরা পূর্ব- ০৪(০৬)২৫।