খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ৬.৩৩ লাখ টন ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬.৮৩ লাখ টন এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫.৭২ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করেছিল। সেখানে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি করা হয়েছে ১২ লাখ ৯৬ হাজার টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি ব্যবস্থায় কোনো চাল আমদানি হয়নি, তখন শুধু ৭ লাখ ৮৪ হাজার টন গম আমদানি করা হয়েছিল। তবে সে বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ লাখ টনের মতো চাল আমদানি করা হয়। হিসাবে গত কয়েক বছরে খাদ্যশস্য আমদানি দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। এ জন্য বেড়েছে খাদ্যশস্য আমদানির ব্যয়ও। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উৎপাদনের পাশাপাশি আমদানি করেও চাহিদা মেটাচ্ছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, খাদ্যসংকট একটা বৈশ্বিক সমস্যা। এখানে বাজার পরিস্থিতি, উৎপাদন, সরবরাহ, দাম এবং নিয়ন্ত্রণের ওপর প্রভাব থাকে প্রভাবশালী দেশগুলোর। যার ওপর নির্ভর করে বিশ্ববাজার। ফলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অনেক দেশে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে। ব্র্যাকের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশে দৃশ্যমান ক্ষুধা হয়তো নেই, কিন্তু চাপা ক্ষুধা আছে। মানুষ স্বেচ্ছা কৃচ্ছ্রের মধ্যে চলে গেছে। সেটা বাধ্য হয়েই তারা করছে। এ জন্য দেশের মানুষ খাদ্যসংকটের মধ্যে রয়েছে, তা আপনি সাদা চোখে দেখতে পাবেন না। এর জন্য মানুষের কাছাকাছি যেতে হবে। মানুষের জীবন ধারণের স্টাইল খেয়াল করতে হবে। এর জন্য শুধু আমাদের ব্যবস্থাপনা নয়, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীও দায়ী বলে তিনি মনে করেন। জাতিসংঘের পাঁচ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের ৫৩টি খাদ্যসংকট পীড়িত দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ২৯ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি রয়েছে। এর মধ্যে তীব্র খাদ্য অনিরাপত্তার শিকার মানুষের সংখ্যা অনুযায়ী শীর্ষ পাঁচটি দেশ হচ্ছে নাইজেরিয়া, সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়া।