ইংলিশ ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেস এই মৌসুমে ইউরোপা লিগে খেলতে পারবে না—উয়েফার এই সিদ্ধান্তকে ‘ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবিচার’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্লাবটির চেয়ারম্যান স্টিভ প্যারিশ।
ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা মাল্টি-ক্লাব মালিকানা সংক্রান্ত নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে প্যালেসকে ইউরোপা লিগ থেকে বাদ দিয়ে কনফারেন্স লিগে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।এর পেছনে মূল কারণ—আমেরিকান ব্যবসায়ী জন টেক্সটর একাধারে ইংলিশ ক্লাব ক্রিস্টাল প্যালেস এবং ফরাসি ক্লাব অলিম্পিক লিওঁ-এর মালিকানায় অংশীদার। টেক্সটরের ইগল ফুটবল গ্রুপের কাছে প্যালেসের ৪৩ শতাংশ এবং লিওঁর ৭৭ শতাংশ মালিকানা আছে।লিওঁ এবার লিগ আঁতে ষষ্ঠ হয়ে ইউরোপা লিগে জায়গা করে নিয়েছে। আর প্যালেস প্রিমিয়ার লিগে ১২তম হলেও ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে এফএ কাপ জিতে ইউরোপা লিগে উঠেছিল। কিন্তু উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণাধীন দুটি ক্লাব ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় একসঙ্গে অংশ নিতে পারে না।এই প্রসঙ্গে স্টিভ প্যারিশ স্কাই স্পোর্টসকে বলেন, ‘আমরা বিধ্বস্ত।ফুটবলের জন্য এটি একটি খারাপ দিন। এটা একেবারেই অন্যায় সিদ্ধান্ত। আমি বিশ্বাস করি, উয়েফাও এটা চায়নি। আমরা একটি ‘বাজে টেকনিক্যালিটি’র কারণে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েছি।সব ক্লাবের সমর্থকরা এই বিষয়ে মর্মাহত।’উয়েফা মালিকানা কাঠামোর স্বচ্ছতা দেখাতে ২০২৫ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাল্টি-ক্লাব কাঠামো থেকে সরে আসার প্রমাণ দিতে পারেনি প্যালেস। যদিও ক্লাবটির দাবি, টেক্সটরের কোন ‘নির্ধারক প্রভাব’ নেই তাদের খেলাধুলা বা ব্যবস্থাপনায়।স্টিভ প্যারিশ বলেন, ‘সবাই জানে, আমরা কোনো মাল্টি-ক্লাব গোষ্ঠীর অংশ নই।আমরা কোনো স্টাফও ভাগ করে নিই না। এটা আমাদের জন্য করা কোনো নিয়ম না। আমরা প্রমাণ দিয়েছি, জনের কোনো প্রভাব নেই আমাদের ক্লাবে। তা সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত—একেবারে হাস্যকর।’প্যালেসের বাদ পড়ায় কপাল খুলতে পারে নটিংহ্যাম ফরেস্টের। তারা এবার প্রিমিয়ার লিগে সপ্তম স্থানে শেষ করেছিল। তবে উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনো ক্লাব বাদ পড়ে, তাহলে লিগ পারফরম্যান্স অনুসারে পরবর্তী ক্লাব সুযোগ পায়।উয়েফা জানিয়েছে, প্যালেস চাইলে কোর্ট অফ আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টে আপিল করতে পারে। ক্লাব চেয়ারম্যান প্যারিশ নিশ্চিত করেছেন, তারা এ বিষয়ে আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছে।অন্যদিকে, টেক্সটর জুন মাসে নিউ ইয়র্ক জেটসের মালিক উডি জনসনের কাছে তার শেয়ার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন, তবে চুক্তি এখনও সম্পন্ন হয়নি। লিওঁতে নিজের নেতৃত্বের পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।এর আগে, আর্থিক জটিলতায় লিগ আঁ থেকে লিওঁ অবনমিত হওয়ায় ইউরোপা লিগে খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। ফলে প্যালেসের জন্য সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরে আদালতের রায়ে লিওঁর অবনমন বাতিল হয়, যা আবার প্যালেসের বিপক্ষে গিয়েছে।