ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) খেলা নিয়ে মারামারির ঘটনায় ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্যাম্পাসে কর্মরত তিন সাংবাদিককে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১৩ জুলাই) এ ঘটনায় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠনগুলোও।
এ দিকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে দুপুর দেড়টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থীরা।এ সময় তারা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানান।ইবিতে ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাংবাদিককে মারধরজানা যায়, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের দুটি শিক্ষাবর্ষের মধ্যে খেলা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ঘটনা কাভার করতে গেলে আরিফ বিল্লাহ নামের এক ক্যাম্পাস সাংবাদিকের ফোন ছিনিয়ে নেন বিভাগটির ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা পারভিন তিনা। পরে একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান, সাব্বির, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, রিয়াজ মোর্শেদ, সৌরভ সোহাগ ও পান্নাসহ কয়েকজন এসে আরিফকে মারধর শুরু করেন।একই সময়ে নুর-ই-আলম এবং রবিউল ইসলাম নামের আরো দুজন সাংবাদিককে মারধর করেন তারা। পরবর্তীতে রবিবার ওই ঘটনার বিচার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ঘটনার বিবরণ দিয়ে পৃথকভাবে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী তিন সাংবাদিক।এ দিকে আজ দুপুরে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকরা সাংবাদিকের ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে জমা দেন। তবে ভুক্তভোগী সাংবাদিকের দাবি, মোবাইল অন করে তিনি দেখতে পান কারিগরি প্রক্রিয়ায় মোবাইলের সব তথ্য ও ডকুমেন্ট নষ্ট করা হয়েছে।তাই তিনি মোবাইলটি গ্রহণ করতে অসম্মতি জানান।গণমাধ্যমকর্মীদের কাজে বাধা ও মারধরের ঘটনায় ক্যাম্পাসজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, খেলাফত মজলিস ও জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া। সংগঠনগুলো গণমাধ্যমকর্মীদের হেনস্তার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে তদন্ত করে বিচারের দাবি জানিয়েছে।ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়েছিলাম।অন্যায়ভাবে আমার ফোন ছিনিয়ে নিয়ে আমাকে মারধর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় আমি প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’মোবাইল ফোন ফেরত না নেওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, প্রক্টর অফিস থেকে ফোনটি ফেরত দেওয়া হলেও অন করার পর দেখা যায় মোবাইলে থাকা সব তথ্য ও ডকুমেন্ট নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য ফোনটি গ্রহণ করিনি।অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষার্থী আফসানা পারভীন তিনাসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তারা জানান, তাদের শিক্ষকরা এ ঘটনার সমাধান করবেন। তবে অভিযুক্ত নাহিদ হাসান সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন।সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার পর মারধরের ঘটনা প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘ওই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোনের ভেতরের তথ্য নষ্ট হওয়ায় সাংবাদিক মোবাইলটি ফেরত নেয়নি। আমরা প্রশাসনের সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’