গতকাল মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে এবং চায়নার কাছ থেকে আমরা প্রযুক্তিগতভাবে বহু সাহায্য নিতে পারি। আপনি দেখবেন যে, আমাদের যে ছেলেমেয়েরা এখন ট্রিপলই করে, সিএসসি করে, কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং করে ওরা এখন তাদের শিক্ষার গন্তব্যকে চায়নার দিকে চিন্তা করে। তো এই যেমন ইলেকট্রনিক্স এন্ড ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং যারা করতে চায় এরা চায়নাকে তাদের গন্তব্য মনে করে।কিন্তু চায়নার সঙ্গে বিএনপির যে ক্ষমতার সময়, বিএনপির ২০০১ থেকে ছয় পর্যন্ত। তো ওই সময়েও বাংলাদেশে চায়নার অনেকগুলো প্রতিনিধি দল এসছে। চায়না কমিউনিস্ট পার্টি বিএনপিকে মনে করতো তাদের সিস্টারড পার্টি। এটা কথা ছিল।কিন্তু এটাও সত্য যে, আওয়ামী স্বৈরাচারের সময় শেখ হাসিনার স্বৈরাচারের সময় যে ভারতের পরেই যারা সবার আগে এই অন্যায়, অবৈধ শরীর শাহাশাসনকে বা নির্বাচনগুলোকে সবার আগে যে স্বীকৃতি দিত এটার নাম চায়না। এখানে দুটা দিকই হতে পারে চায়নাকে আমরা মেনটেইন করতে পারি নাই বা চায়না আমাদের দিকে থাকতে চাই নাই ওই সময়। বাট স্বৈরচারের পতনের পর শেখ হাসিনার পলায়নের পর চায়না আবার বিএনপির দিকে সেই উষ্ণতার হাতটা বাড়াচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, চায়না তো নিজেই গণতন্ত্র চর্চা করে না। গণতন্ত্রের জন্য চায়নার দিকে বা ওয়েস্টের দিকে তাকিয়ে লাভ নাই।গণতন্ত্রের জন্য আমরা নিজেদের শক্তির নিজেদের পায়ের যে ক্ষমতা আছে দাঁড়ানোর ক্ষমতাটা এটাই মূল। এটার উপরে ভরসা করতে হয়। কারণ স্বৈরাচার বিদায় করার জন্য আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রায় ১৪০০ জন জীবন দিয়েছে। হাজার হাজার ছেলেমেয়েরা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। অন্ধত্ব বরণ করেছে। এই জন্য আমি মনে করি, গণতন্ত্রের জন্য ওই দেশের জনগণ কতটুকু গণতন্ত্রকে রক্ষা করে, তার অধিকার কতটুকু রক্ষা করতে পারে, এটার উপরই নির্ভর করে গণতন্ত্র কতটুকু থাকবে।কারণ আপনি দেখবেন যে, আজকে উন্নত দেশগুলোতে যে নির্বাচনের পর ট্রাম্পকে নিয়ে একটা খুব কথাবার্তা হচ্ছে। এল সালবাদরের একজনকে নিয়ে বলা হচ্ছে, এখন আলোচনায় আসছে। তাইলে সুপ্রিম কোর্টের একটা সেনাবাহিনী দরকার কারণ ট্রাম্প মানছেন না আদালতের কথা।গণতন্ত্রের জন্য আমাদের যে দৃষ্টিভঙ্গি আছে, আমরা যে গণতন্ত্রকে আমরা কতটুকু গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে চাই, আমার অধিকারকে আমি কতটুকু অক্ষুণ্ন রাখতে চাই, প্রতিষ্ঠিত রাখতে চাই, চর্চা করতে চাই, এটা হলো আমার যে অধিকার সচেতনতা এটার বিষয়। এটা বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে খুব একটা লাভ নাই। শুধুই কি আমাদের উপর সবকিছু নির্ভর করে? এই অঞ্চলে অনেকের কথার সঙ্গে আমার কথাটা মিলবে না। এই অঞ্চলে আমেরিকা মার খেয়ে যায় নাই? বিভিন্ন সময় পরাজিত হয় নাই? তার নীতি পরাজিত হয়েছে। এই কাবুলে সব পরাশক্তি পরাজিত হয়েছে। সব পরাশক্তি পৃথিবীতে আফগানিস্তানে, কিন্তু আজকে কাবুলে যে অবস্থাটা, মেয়েদের অধিকার নিয়ে তারা যা বলছিলেন তা কিন্তু তারা রক্ষা করছেন না। মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় যেতে দিচ্ছেন না। এই কারণে আমি বলি, ডেমোক্রেসির এই জায়গাটাতে আজকে যারা ধর্মীয় নামে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল, তারা বলছেন গণতন্ত্রের অধিকার নিয়ে, তারা প্রতিদিন সভা-সমাবেশ করছেন। কিন্তু তার যে ডেফিনেশন, সেই ডেফিনেশন অনুযায়ী ধরে নিলাম, এক সেকেন্ড ১০ সেকেন্ডের জন্য তারা আজকে ত্রিফোর্থ মেজরিটি পেয়ে গেলেন। তাইলে কি তারা এই শাসনতন্ত্র এই সংবিধান রাখবেন? মেয়েদের এই অধিকার রাখবেন? রাখবেন না। আমাদের ভোটাধিকার আমাদের যে ভোট সিস্টেম এটা রাখবেন? রাখবেন না। কারণ কাতারে ভোট নাই, ভোট নাই ইউএতে, ভোট নাই সৌদি আরবে, ভোট নাই ইরানে।আপনি ইসলামী শাসন ব্যবস্থার কথা, ইসলামী আন্দোলনের কথা বলে, ইসলামী শাসনতন্ত্রের কথা বলে, আপনি করবেন গণতন্ত্রের মোড়কে আন্দোলন। গণতন্ত্রের লেবাসে আন্দোলন করবেন আর আপনি ক্ষমতায় গেলে আপনি আমার সব গণতন্ত্র হরণ করবেন। আপনাকে স্পষ্ট বলতে হবে, গণতান্ত্রিক অধিকার এনজয় করতে হলে যে, আমি যদি কোনোদিন ক্ষমতায় যাই, আজ থেকে ২০ হোক ২৫ হোক ৫০ হোক আমি এই গণতন্ত্রের অধিকার নিয়ে আমি আমার অধিকার চর্চা করেছি। আমি এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পাল্টাব না। তাইলে ঠিক আছে।কিন্তু গণতন্ত্রের মূলকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে ভোটের মাধ্যমে ভোট বাতিলের যে রাজনীতি এটার নাম মুনাফিকি এটা আর কিছুই না। আপনি মুনাফেকির আশ্রয় নিয়া রাজনীতি করছেন। আপনি গণতান্ত্রিক রাজনীতি করছেন। তাইলে আপনি বলেন যে, নো ইসলাম টিসলাম কিছু নাই ভাই। খেলাফত টেলাফতের কোনো বিষয় নাই। আমি গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে আসছি। আমি আজীবন গণতন্ত্রের রাজনীতি করব।