ডায়াবেটিস মানেই শুধু টাইপ ১ বা টাইপ ২ নয়। গর্ভাবস্থাতেও অনেক মহিলার শরীরে দেখা দেয় বিশেষ এক ধরনের ডায়াবেটিস— জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস। এই অবস্থায় শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ করে না। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
সমস্যাটি সাময়িক হলেও, সময়মতো চিকিৎসা না হলে মা ও গর্ভস্থ সন্তানের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।কেন হয় জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস?গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের বিভিন্ন পরিবর্তন হয়। এর ফলে ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। যেকোনো গর্ভবতী নারীরই এই সমস্যা হতে পারে।তবে কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরো বেশি, যাদের ৩৫ বছরের বেশি বয়স, অতিরিক্ত ওজন, পারিবারিক ইতিহাসে ডায়াবেটিস থাকলে।কিভাবে ধরা পড়ে এই রোগ?ফাস্টিং সুগার ও পোস্ট প্র্যান্ডিয়াল সুগার টেস্ট করালেই বোঝা যায় রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে কি না। এ রোগ সাধারণত ডেলিভারির পরে সেরে যায়। তবে গর্ভাবস্থায় তা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।তাই দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে কী করবেন?
সতর্ক থাকুন ডায়েট নিয়েমিষ্টি খাবার ও অতিরিক্ত চিনি এড়িয়ে চলুন। কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার খান— যেমন ওটস, আটার রুটি, বাদাম, তাজা ফল ও শাকসবজি। নিয়মিত ও পরিমাণমতো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
শরীরচর্চা করুন নিয়ম মেনে
ভারী ব্যায়াম নয়, হালকা এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং ও হাঁটা চালিয়ে যান। গর্ভাবস্থার অনুপযুক্ত ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন, প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে এক্সারসাইজ করুন।ওজন যেন বেশি না বাড়ে, সে দিকে খেয়াল রাখুন।
পানি পান করুন প্রচুর
দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানি শরীর থেকে বাড়তি শর্করা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়।
জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস সাময়িক একটি সমস্যা হলেও তা অবহেলার নয়। নিয়মিত চিকিৎসা, স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও পরিমিত শরীরচর্চার মাধ্যমে সহজেই এই অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য গর্ভাবস্থায় একটু বাড়তি সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনই দ্রুত সাড়া দেওয়া প্রয়োজন যেকোনও অসঙ্গতির ক্ষেত্রে।
এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ..