জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অর্ধশতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে তারা কিছুই জানে না।আজ সোমবার ভোররাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পেছনে এবং পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সামনের জঙ্গলে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এমনকি ইতোমধ্যে সীমানা প্রাচীর দেওয়া শুরু হয়েছে।
এর আগে একই স্থানে সীমানা নির্ধারণ করে লাল পতাকা টাঙানো হলে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। তারও আগে পরিবেশবিজ্ঞান ভবনের পাশে জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিবেশবিদ ও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে তা বাস্তবায়িত হয়নি।বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার ব্যয়ে ১২টি স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ছয়টি দশতলা হল নির্মাণ শেষ হয়েছে।এসব স্থাপনার জন্য এক হাজারের বেশি গাছ কাটা হয়েছে। এ নিয়ে নানা সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে গেছে প্রশাসন। তবে বর্তমান প্রশাসনের সময় এটাই প্রথম বড় ধরনের গাছ কাটার ঘটনা।এ বিষয়ে ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সজিব আহমেদ জেনিচ বলেন, ‘মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কোনো উন্নয়ন কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছি।অথচ সিএসই ভবনের সামনে রাতের আঁধারে ৪০টির বেশি গাছ কাটা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক বা ভিসি কেউই জানেন না কে এই গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা জানতে চাই, কে এই কাজ করেছে। প্রয়োজনে আমরা আইনি পথে যাব।’উন্নয়ন পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ছয়তলা বিশিষ্ট ১ লাখ ৩০ হাজার বর্গফুটের ভবন নির্মাণ করা হবে।এতে অন্তত ৬০টি গাছ কাটতে হবে। গাছগুলোর মধ্যে সেগুন, মেহগনি, কাঁঠাল, নিম, তালগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে।এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘আজ কারা গাছগুলো কেটেছে, তা আমি জানি না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ ও প্রকৃতির বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এই প্রকল্প নিয়ে একটি প্রক্রিয়া চলমান আছে। এরপরও প্রশাসনের অগোচরে হঠাৎ এতগুলো গাছ কাটা হয়েছে, বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হবে।’