ওবায়দুল্লাহ্ এলাকার উত্তর মোল্লাপাড়া গ্রামের মমিন মিয়ার ছেলে। আর ফাহাদ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া এলাকার সৌদি প্রবাসী মকবুল হোসেনের ছেলে।স্বজনরা জানায়, রবিবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ির উঠানে খেলা করছিল ওবায়দুল্লাহ্ ও ফাহাদ। কোনো এক সময় স্বজনদের চোখের আড়ালে খেলতে খেলতে বাড়ির পাশে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের বেজমেন্টের গর্তে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে পরে যায় তারা।তাদের দেখতে না পেয়ে পরিবারের লোকজন কয়েকঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর ওই ভবনের বেজমেন্টের গর্তের পানিতে ভাসমান অবস্থায় ওবায়দুল্লাহ্ ও ফাহাদকে দেখতে পায় এলাকাবাসী। পানি থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। তাদের এমন করুণ মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।নিহত ফাহাদের মামা নওফেল জানান, তার বোন সোমা আক্তার পাকুন্দিয়া থাকে।তার স্বামী মকবুল হোসেন সৌদি প্রবাসী। ঈদ উপলক্ষে রবিবার কিশোরগঞ্জে শহরে ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছিল। ব্যাংক থেকে টাকা তোলা শেষে তাদের বাড়িতে আসে। কিন্তু এরই মধ্যে এমন মর্মান্তিক ঘটনা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না।তিনি বলেন, ফাহাদ আমার বড় ভাই মমিনের ছেলের সঙ্গে খেলতে খেলতে এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়।এ সময় তিনি নবনির্মিত বাড়ির মালিককে দোষারোপ করেন। পাকুন্দিয়ার চরকাওনার স্বপন মিয়া এই বাসাটি করাচ্ছেন। তিনি রাস্তার পাশে কোনোরকম নিরাপত্তা বেষ্টনী না দিয়েই কাজ করাচ্ছেন। আর এ কারণেই আজকে আমাদের পরিবারের দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।এদিকে আরেক শিশু ওবায়দুল্লাহর মা মরিয়ম আক্তার প্রিয় সন্তানের মৃত্যুতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তার আতর্নাদে সবাই স্তব্ধ হয়ে গেছে। একটু স্বাভাবিক হলে তিনি জানান, প্রায় ৮ বছর পর তার এই সন্তানটির জন্ম হয়। খুব আদরে লালনপালন করেছেন। সবসময় চোখে চোখেই রাখতেন। কিন্তু আজ কেন তার চোখের আড়ালে এমন হলো, এটা তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ্ আল মামুন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুর্ঘটনার স্থানের যাবতীয় তথ্য আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।