পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোতে রবিবার গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে ও ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির দাবিতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভে অংশ নেয়।
সবচেয়ে বড় মিছিলগুলোর একটি অনুষ্ঠিত হয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রস্থল রামাল্লায়, যা জেরুজালেমের ঠিক উত্তরে অবস্থিত। সেখানে শত শত মানুষ শহরের প্রধান চত্বরে সমবেত হয় এবং ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে বিক্ষোভ করে।অনেক বিক্ষোভকারী ইসরায়েলের হাতে নিহত বা বন্দি ফিলিস্তিনিদের ছবি বহন করছিল, পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় চলা দুর্ভিক্ষের চিত্র তুলে ধরে।জাতিসংঘ সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় ‘দুর্ভিক্ষ বিকাশমান’।বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ফিলিস্তিনি একাডেমিক ও লেখক রুলা ঘানেম বলেন, ‘আমার ছেলে (ইসরায়েলের) মেগিদো কারাগারে বন্দি, সে অনেক কষ্টে আছে—যেমন ওষুধের অভাব, খাবারের অভাব।তিনি এএফপিকে আরো জানান, তার ছেলের ওজন ১০ কেজি কমে গেছে এবং সে খোস-পাঁচড়ায় ভুগছে।গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের হাতে বন্দি ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বিপুলভাবে বেড়েছে।তাদের অনেকেই সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও কিছু ফিলিস্তিনি শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজনৈতিক মতামত প্রকাশের কারণেই গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বন্দি ও সাবেক বন্দিদের কমিশন। কমিশনের মুখপাত্র থায়ের শ্রাইতে এএফপিকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এসব দুর্দশার অংশীদার, যতক্ষণ না ফিলিস্তিনি জনগণকে ও বন্দিদের রক্ষা করতে তারা দ্রুত হস্তক্ষেপ করে।’এদিকে শিশুদের ওপর গাজা যুদ্ধের ভয়াবহ প্রভাবের প্রতীক হিসেবে একদল বিক্ষোভকারী কঙ্কালের সাজে উপস্থিত হয়ে পুতুল নিয়ে বিক্ষোভ করে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শিশুরা অপুষ্টির সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ প্রবেশ কঠোরভাবে সীমিত করেছে, যেখানে যুদ্ধ শুরুর আগেই ১৫ বছর ধরে অবরোধ চলছিল। জাতিসংঘ সংস্থা, মানবিক সংগঠন ও বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ইসরায়েল যে অল্প পরিমাণ খাদ্য সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেয়, তার বড় অংশই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে লুট হয়ে যায় বা অন্যত্র চলে যায়।৩৯ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী তাগরীদ জিয়াদা বলেন, ‘আমরা আশা করি, আজকের আমাদের এই অবস্থান গাজার মানুষের প্রতি সমর্থন ও ক্ষুধার্ত শিশুদের জন্য প্রভাব ফেলবে।’পশ্চিম তীরের অন্যান্য প্রধান শহর, যেমন উত্তরের নাবলুস ও দক্ষিণের হেবরনেও রবিবার বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বহু সরকারি কর্মচারীকে মিছিলে অংশ নিতে ছুটি দেওয়া হয়। যদিও গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে কিছুটা নিয়মিতভাবেই বিক্ষোভ হয় পশ্চিম তীরে, বিভিন্ন শহরে সমন্বিতভাবে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হওয়া খুবই বিরল ঘটনা।