কুমিল্লার চান্দিনায় কথিত ‘সমাজচ্যুত’ এক ব্যক্তিকে কোরবানির মাংস দেওয়ায় মাংস বিতরণকারীর বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)-কে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রবিবার (২০ জুলাই) উচ্চ আদালত এই রুল জারি করেন।আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন।রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।রিটকারী আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন বলেন, প্রায় চার বছর আগে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার টাটেরা গ্রামে সমাজের জন্য নির্দিষ্ট করা মসজিদে নামাজ আদায় নিয়ে আব্দুল হালিমের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় সমাজপ্রধান আলী আহাম্মদের বিরুদ্ধে। গত ঈদুল আজাহার দিন আব্দুল হালিমের পরিবারকে কোরবানির মাংস বিতরণ করেন তার চাচাতো ভাই ইব্রাহিম খলিল। এর পরদিন ‘সমাজচ্যুত’ আব্দুল হালিমকে মাংস বিতরণ করায় ইব্রাহিম খলিলের বাড়িঘরে ভাঙচুর করে আলী আহাম্মদ, তার দুই ছেলে ফয়েজ আহাম্মদ ওরফে সোহেল, ফিরোজ আহাম্মদসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০-২৫ জন।পরে এ ঘটনায় গত ৯ জুন চান্দিনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ইব্রাহিম খলিল। এরপর সমাজপতি আলী আহাম্মদের লোকজন ইব্রাহিম খলিলকে ক্রমাগত মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন। হুমকির ভয়ে ইব্রাহিম খলিলের পরিবার এখন বাড়িতে ফিরতে পারছে না।এ ঘটনায় গত ১২ জুন কুমিল্লার ডিসি, এসপি ও চান্দিনার ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ইব্রাহিম খলিল।এ বিষয়ে একাধিক স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন- সমাজচ্যুত পরিবারকে কোরবানির মাংস বিতরণ করায় মাংস বিতরণকারী পরিবারের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিসি, এসপির কাছে আবেদন করেও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না একটি পরিবার। বিষয়টি জনস্বার্থ বিবেচনায় স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ২৯ জুন হাইকোর্টে রিট করি। তিনি বলেন, আজ আমি ওই রিটের পক্ষে নিজেই শুনানি করি।শুনানি শেষে আদালত রুল জারির পাশপাশি এ ঘটনায় কুমিল্লার ডিসি, এসপি, ইউএনও বরাবর করা আবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে রুল জারি করেছেন।ভূক্তভোগী ইব্রাহীম খলিল বলেন, আমার ওপর চালানো অমানবিক ঘটনার পর চান্দিনায় কর্মরত সাংবাদিকরা জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করেন। বিষয়টি উচ্চ আদালতের একজন আইনজীবীর নজরে আসে। তিনি জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন।