রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى أَمْرٍ إِذَا أَنْتُمْ فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ
‘সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যে পর্যন্ত না (তোমরা) ঈমানদার হবে, আর ঈমানদার হতে পারবে না, যে পর্যন্ত না পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন করবে। আমি কি এমন একটি কাজের কথা তোমাদের বলে দিব না, যখন তোমরা তা করবে, পরস্পর ভালোবাসা স্থাপিত হবে? তোমরা একে অপরের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও।
আরো বলেছেন-
تَهَادَوْا تَحَابّوا‘তোমরা উপহার দাও, ভালোবাসা সৃষ্টি হবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)
অন্য এক হাদিসে বলেন, ‘উপহার বিদ্বেষ দূর করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৩০)
আনন্দে শরিক হওয়াও ইসলামী সামাজিকতার দাবি। কোরআনে বলা হয়েছে—
‘আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না; সদাচরণ কোরো বাবা-মা, আত্মীয়, এতিম, মিসকিন, নিকট ও দূর প্রতিবেশী, সঙ্গীসাথি, মুসাফির এবং অধীনদের সঙ্গে।’ (নিসা : ৩৬)
মহানবী (সা.) বলেছেন—
‘যে ওলিমায় ধনীদের ডাকা হয়, গরিবদের বাদ দেওয়া হয়—তা নিকৃষ্ট খাবার।
কিন্তু বাস্তবে এই আমন্ত্রণ-উপহারের চাপ অনেকের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। অসচ্ছল কেউ মানসম্মত উপহার দিতে না পেরে সংকটে পড়ে; আবার কেউ খরচ ‘পুষিয়ে’ নিতে অনাহূত সঙ্গী নিয়ে আসে—যা আয়োজনের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
সমাধান হতে পারে উপহারকে সামাজিক বাধ্যবাধকতায় না রেখে স্বেচ্ছা ও আন্তরিকতার ভিত্তিতে রাখা। কিছু আয়োজক দাওয়াতপত্রে লিখে দেন- ‘দয়া করে কোনো গিফট আনবেন না’, এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ইসলামে উপহার আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হওয়া উচিত, সামাজিক চাপে নয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর জন্য দেয়, আল্লাহর জন্য বিরত থাকে, আল্লাহর জন্য ভালোবাসে ও ঘৃণা করে—সে ঈমান পূর্ণ করল।’ (তিরমিজি, হাদিস ২৫২১)
অতএব, মুসলিম সমাজে উপহার ও আমন্ত্রণের চর্চা অবশ্যই থাকতে পারে, তবে তা হবে স্বতঃস্ফূর্ত, আন্তরিক এবং একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে; সামাজিকতার অযথা শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে। এভাবেই ঈমান, ভালোবাসা ও সামাজিক সৌন্দর্য মিলেমিশে বিকশিত হবে।