পালাবে কোথায় বান্দা; মহান আল্লাহর নজরদারির বাইরে যেতেও সে অক্ষম! বর্ণিত আছে, জুলায়খা যখন ইউসুফ (আ.)-কে নির্জনে পেল, তখন দাঁড়িয়ে গেল এবং ঘরে সংরক্ষিত মূর্তির চেহারা ঢেকে দিল। ইউসুফ (আ.) বললেন, ‘তুমি কি একটি নিষ্প্রাণ জড় পদার্থ দেখবে বলে লজ্জা পাচ্ছো? তবে আমি মহাপরাক্রমশালী বাদশাহর নজরদারিতে লজ্জা পাবো না কি?’
প্রসঙ্গত আবদুল্লাহ ইবন দিনার বলেন, ‘আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর সঙ্গে মক্কার উদ্দেশ্যে বের হলাম এবং পথিমধ্যে আমরা বিশ্রামের জন্য অবস্থান করলাম, অতঃপর পাহাড় থেকে এক রাখাল আমাদের কাছে এলো; উমর (রা.) তাকে লক্ষ্য করে বললেন : হে রাখাল! ছাগলের পাল থেকে একটি ছাগল আমাদের কাছে বিক্রি করো। রাখাল বলল, ছাগলের মালিক সে নয়। তখন উমর (রা.) বললেন : তুমি তোমার মালিককে বলবে ছাগলটি বাঘে খেয়েছে। তখন রাখাল বলল, আল্লাহ কোথায় থাকবেন? এ কথা শুনে উমর (রা.) কেঁদে ফেললেন এবং রাখালের মালিকের কাছে গেলেন এবং তার কাছ থেকে তাকে কিনে নিয়ে মুক্ত করলেন।’ (মিনহাজুল মুসলিম)বস্তুত ভারবাহী প্রাণী অসহায় হয়ে দৃঢ়ভাবে হাঁটু গেড়ে লুটিয়ে পড়লে, মালিকের আপ্রাণ চেষ্টা থাকে অবোধ প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি দেখানোর। বান্দাও যখন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির ব্যাকুলতায় মুরাকাবারত হয়, তখন সে সিফাতে রাব্বানির পর্যায়ে পৌঁছে। তখন মহাপ্রভু হয়ে যান বান্দার, বান্দা হয়ে যান আল্লাহর বন্ধু। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার কোনো বন্ধুর সঙ্গে শত্রুতা করবে, তার বিরুদ্ধে আমার যুদ্ধের ঘোষণা…তখন আমি তার ওই কান হয়ে যাই, যার দ্বারা সে শোনে, তার ওই চোখ হয়ে যাই, যার দ্বারা সে দেখে, তার ওই হাত হয়ে যাই, যার দ্বারা সে ধরে এবং তার ওই পা হয়ে যাই, যার দ্বারা সে চলে…।’” (হাদিসে কুদসি, বুখারি)