অন্যদিকে, ভুল নিয়ত একটি ভালো কাজকেও মূল্যহীন করে দেয়। হাদিসে বলা হয়েছে, “আমলগুলো নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।” (বুখারি, হাদিস : ১) যে হিজরত আল্লাহ ও রাসুলের উদ্দেশ্যে, সেটিই প্রকৃত হিজরত। আর যে হিজরত কোনো নারী বা দুনিয়ার কারণে, তার হিজরত সেখানেই সীমাবদ্ধ।তবে শুধু নিয়ত নয়, পদ্ধতিও সঠিক হতে হবে। তিন সাহাবী যখন অধিক ইবাদতের উদ্দেশ্যে রাসুল (সা.)-এর পন্থা ছাড়িয়ে যেতে চাইলেন—একজন সারারাত নামায, একজন সারা বছর রোযা, আরেকজন বিবাহ না করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তখন রাসুল (সা.) তাদের সংশোধন করলেন। বললেন, “আমি রোযা রাখি, ঘুমাই, নামায পড়ি, আবার বিবাহও করি। যে আমার সুন্নত থেকে বিমুখ, সে আমার দলভুক্ত নয়।” (বুখারি, হাদিস: ৫০৬৩)কাজেই এমন কিছু কাজ আছে; যা দেখতে বৈধ, কিন্তু শরিয়তের নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করার কারণে তা বিদআত হয়ে যায়। যেমন মৃতের জন্য নির্দিষ্ট দিনে কোরআনখানি ও মেজবান। রাসুল (সা.) বলেন, “যে কেউ আমাদের দ্বীনে এমন কিছু সংযোজন করে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।” (বুখারি, হাদিস: ২৬৯৭)মোটকথা, যে কোনো আমল আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে চাইলে এ তিনটি বিষয় অপরিহার্য—নিয়তের বিশুদ্ধতা, আমলের বিশুদ্ধতা এবং কর্মপদ্ধতির বিশুদ্ধতা। পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকেও কোনো কাজের গ্রহণযোগ্যতার জন্যে সে কাজের শুদ্ধতা এবং এর শুদ্ধ কর্মপদ্ধতি অনিবার্য। এর কোনো একটি ছুটে গেলে কাঙ্কিত ফল হাসিল করা যায় না। আর আল্লাহ তায়ালা যেহেতু অন্তর্যামী, তিনি আমাদের মনের কোণে লুকায়িত ভাবনাটুকুও জানেন, সঙ্গত কারণেই তাঁর দরবারে গৃহীত হওয়ার জন্যে নিয়তের শুদ্ধতা অনিবার্য।আল্লাহ আমাদের সকলকে বিশুদ্ধ নিয়তে সঠিক আমলগুলো শরিয়ত নির্দেশিত পন্থায় সম্পাদন করার তাওফিক দান করুন ।