নাইজেরিয়ান মুসলিম সমাজ রমজানের জন্য মানসিক ও বস্তুগত উভয়ভাবে প্রস্তুত হয়ে থাকে।
ইফতারের সামান্য আগে নাইজেরিয়ান পরিবারগুলো পরস্পরে মধ্যে ইফতার বিনিময় করে। ইফতার আয়োজনে তারা ‘হুম’ ও ‘কোকো’ নামক পানীয় পছন্দ করে, যা গম ও চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়। ইফতার আয়োজনে স্থানীয় ফলগুলো বেশ জনপ্রিয়। সামান্য ইফতার গ্রহণ করে তারা মাগরিবের নামাজ আদায় করতে যায়।
নামাজ শেষে রাতের খাবার গ্রহণ করে। এ সময়ের আয়োজনে থাকে গোশত, ভাত ও আলু। খাবার শেষে তারা চা পান করে। এ ছাড়া ভুট্টার আটায় তৈরি রুটি, ডিম ভাজা, কলা ইত্যাদিও ইফতারে সময় খেয়ে থাকে সে দেশের মুসলিমরা। নাইজেরিয়ান মুসলিমদের আরেকটি ইফতার সংস্কৃতি হলো, প্রতিবেশী কয়েক ঘরের লোক কোনো বাড়ির আঙ্গিনায় একত্র হয়ে ইফতার করা। এ ছাড়া তাদের কাছে রমজানে ‘আসিদাহ’, ‘দাউয়্যাহ’, ‘উনজুঝি’ ও ‘লুবিয়া’ নামের খাবারগুলো বেশ জনপ্রিয়।
তারাবির নামাজ আদায় করতে পুরুষরা মসজিদে যায় এবং শিশুরা ঘরে আলাদা জামাত করে। তারাবির নামাজ শেষ করে তারা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে যায়। এটি নাইজেরিয়ান সমাজের সৌন্দর্য। মহিলারা রমজানে হরেক রকম খাবার তৈরি করে। আর যারা ধর্মীয় জ্ঞান রাখে তারা মেয়েদের ইসলামী আচার-আচরণ ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়। আবার কোনো কোনো পুরুষ স্ত্রীদের তাদের সঙ্গে মসজিদে নিয়ে যায়। রমজানের শেষাংশে জাকাত ও ফিতরা আদায় করে। নাইজেরিয়ার মুসলিমরা খোলা প্রাঙ্গণে ঈদের নামাজ পড়তে পছন্দ করে।
নাইজেরিয়া একটি মিশ্র ধর্মবিশ্বাসের দেশ। এখানে বিপুলসংখ্যক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী বসবাস করে। নাইজেরিয়ার মুসলিমরা তাদেরকেও রমজান আয়োজনে সংযুক্ত করে, বিশেষ করে রমজান মাসে যেসব জনসেবামূলক কাজ করা হয়, তাতে ধর্মের ভিন্নতা বিবেচনা করা হয় না। ইফতার আয়োজনেও ডাকা হয় অমুসলিম প্রতিবেশীদের। মূলত নাইজেরিয়ার মুসলিমরা রমজানকে ধর্মীয় সম্প্রীতি স্থাপনেরও একটি মাধ্যম মনে করে।
সূত্র : আফ্রিকা নিউজ ডটকম, হাওজা নিউজ ডটকম