লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও কর্মব্যস্ত অঙ্গ। এটি একা প্রায় ৫০০-এর বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে—যেমন রক্ত পরিশোধন, হজমে সাহায্য, এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ। কিন্তু যখন এই লিভারে সমস্যা দেখা দেয়, তখন শরীরের সামগ্রিক কার্যক্ষমতা ভেঙে পড়তে শুরু করে। লিভার সিরোসিস হলো এমন এক অবস্থা, যেখানে লিভারের সুস্থ কোষগুলো ধ্বংস হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়।
এটি ধীরে ধীরে কিন্তু মারাত্মক প্রভাব ফেলে শরীরের উপর।কী কী কারণে লিভার সিরোসিস হয়?অতিরিক্ত মদ্যপান
মদের সরাসরি প্রভাব পড়ে লিভারের উপর। নিয়মিত বা অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনে লিভারের কোষ ধ্বংস হয়ে যেতে থাকে। এভাবেই ধীরে ধীরে সিরোসিস তৈরি হয়।
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস
এই ভাইরাসগুলো শরীরে দীর্ঘদিন থাকলে লিভারে দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ সৃষ্টি করে, যা সিরোসিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। নিয়মিত হেপাটাইটিস পরীক্ষা করুন ও প্রয়োজনীয় টিকা নিন।
জাঙ্ক ফুড ও স্থূলতা
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের ফলে লিভারে চর্বি জমে। দীর্ঘদিন এমন চললে তা ফ্যাটি লিভার হয়ে সিরোসিসে রূপ নিতে পারে।সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন, শরীরচর্চা করুন ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ওষুধের অপব্যবহার
স্টেরয়েড, ব্যথানাশক বা অন্য কোনও ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খেলে লিভারের উপর মারাত্মক চাপ পড়ে। শুধু প্রয়োজন হলে এবং ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করুন।
রাসায়নিকের সংস্পর্শে থাকা
যারা রং, দ্রাবক, গ্যাস বা রাসায়নিকের সংস্পর্শে কাজ করেন, তাদের লিভার ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কাজের সময় সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করুন ও মাঝে মাঝে ডিটক্স ডায়েট অনুসরণ করুন।
শরীরে প্রোটিন ও ভিটামিনের অভাব থাকলে লিভারের কোষ মেরামতের গতি কমে যায়। ফলে লিভার দুর্বল হতে থাকে। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, ডাল ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাদ্যতালিকায় রাখুন।
লিভার ভালো রাখতে যা করবেন
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন।
অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।
হেপাটাইটিসের টিকা নিন।
হেলদি ডায়েট ও শরীরচর্চা করুন।
সঠিক নিয়মে ওষুধ গ্রহণ করুন।
লিভার সিরোসিস এক দিনে হয় না। এটি ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে, কিন্তু একবার শুরু হলে থামানো কঠিন। তাই এখন থেকেই সচেতন হোন। আপনার জীবনযাত্রায় ছোট কিছু পরিবর্তন লিভারকে রক্ষা করতে পারে বড় বিপদ থেকে।
এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ..