রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়লে চিকিৎসকরা সকালে হাঁটতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অনেকে হাঁটতেও যাচ্ছেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না, হাঁটতে যাওয়ার সময় কয়েকটি বিষয়ে সচেতন না হলে লাভের পরিবর্তে ক্ষতিই বেশি হতে পারে।
সাধারণত ঘুম থেকে উঠেই মানুষ হাঁটতে বেরিয়ে যান।কিন্তু এমন অভ্যাস ভালো নয়। এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো এড়িয়ে গেলে যেকোনো সময় বিপদের সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে।
পানি খাওয়াসকালে উঠলেন, মুখ ধুয়ে চা খেয়ে হাঁটতে চলে গেলেন। ফুরফুরে হাওয়ায় যতই হাঁটতে ভালো লাগুক না কেন, ঘাম ঝরলেই পানির অভাব হতে পারে।পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি খাওয়া দরকার। পানি সারা রাত বিপাকক্রিয়ার ফলে শরীরে তৈরি হওয়া দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। তা ছাড়া গরমের দিনে হাঁটাহাঁটির সময়, বিশেষত দ্রুত হাঁটলে ঘাম ঝরবে। আগে থেকে পানি না খেলে উল্টো শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।তাতে হিতে বিপরীত হবে। ক্লান্ত লাগবে, মাথা যন্ত্রণাও হতে পারে। বরং দীর্ঘক্ষণ হাঁটাহাঁটির পরিকল্পনা থাকলে প্রয়োজনমতো গলা ভেজানোর জন্য সঙ্গে পানি রাখা ভালো।
খালি পেটে হাঁটাহাঁটি নয়সকালে উঠে অনেকেই কিছু খেয়ে হাঁটতে চলে যান। কিন্তু খালি পেটে হাঁটা ঠিক নয় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা।বিশেষত, দীর্ঘক্ষণ শরীরচর্চা, হাঁটার অভ্যাস করতে হলে একেবারে খালি পেটে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ রাতের খাওয়া ও প্রাতরাশের মধ্যে সময়ের অনেকটা ফাঁক থাকে। তার ওপর সকালে কিছু না খেয়ে হাঁটতে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নেমে যেতে পারে, ক্লান্ত লাগতে পারে। তবে নাশতা খেয়ে হাঁটতে যেতে বলা হচ্ছে না। বরং ভেজানো ছোলা, বাদাম, আখরোট জাতীয় হালকা খাবার খেয়ে হাঁটতে যাওয়া উচিত।
গা গরম করাহাঁটতে গিয়ে অনেকেই খোলা হাওয়ায় কার্ডিয়ো, ব্যায়াম করেন। কিন্তু তার আগে ওয়ার্ম-আপ বা গা গরম করেন না। ঘুমানোর সময় শরীর, পেশি সবই বিশ্রামে থাকে। সূর্য ওঠার পর সময় যত এগোয়, শরীরও ছন্দে ফেরে। চনমনে হয়ে ওঠে। ঘুম থেকে উঠে শুরুতেই দৌড়ানোর আগে বা জোরে হাঁটার আগে পেশিগুলোকেও চাঙ্গা করা দরকার। আর এ জন্যই প্রয়োজন ওয়ার্ম-আপ।৫ মিনিট হালকা জগিং করলে বা সহজ ব্যায়াম করলে মাংসপেশিতে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়। পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ে। এতে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা মাংসপেশি সংকোচন এবং প্রসারণে সহায়ক। এর ফলে চট করে পেশিতে টান ধরে যায় না।
ক্যাফেইনঅনেকেরই ঘুম থেকে উঠে গরম চা-কফি ছাড়া চলে না। প্রথমত, খালি পেটে চা-কফি খেলে কারো কারো অম্বলের সমস্যা হয়। দ্বিতীয়ত, দুই-তিন কাপ কফি খেয়ে হাঁটতে গেলে আর পর্যাপ্ত পানি না খেলে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বাড়ে। কফি ‘ডাই-ইউরেটিক’। যা শরীর থেকে পানি এবং লবণ বের করতে কিডনিকে উদ্দীপিত করে। ফলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
শুরুতেই অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটলে উপকার হয় বলে প্রথম দিনেই লম্বা রাস্তা হাঁটতে গেলে সমস্যা হতে পারে। বরং হাঁটার অভ্যাস ধীরে ধীরে হওয়াই ভালো। প্রথম সপ্তাহে এক বা দুই কিলোমিটার হেঁটে ধীরে ধীরে সেই দূরত্ব বাড়াতে পারেন। একদিনে অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটি করতে গেলে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ..