لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ الْمَدِينَةَ انْجَفَلَ النَّاسُ قِبَلَهُ وَقِيلَ قَدْ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَدْ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ قَدْ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ . ثَلاَثًا فَجِئْتُ فِي النَّاسِ لأَنْظُرَ فَلَمَّا تَبَيَّنْتُ وَجْهَهُ عَرَفْتُ أَنَّ وَجْهَهُ لَيْسَ بِوَجْهِ كَذَّابٍ فَكَانَ أَوَّلَ شَىْءٍ سَمِعْتُهُ تَكَلَّمَ بِهِ أَنْ قَالَ “ يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَفْشُوا السَّلاَمَ وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ وَصِلُوا الأَرْحَامَ وَصَلُّوا بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ بِسَلاَمٍ ” .
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (হিজরত করে মক্কা থেকে) মদীনায় এলেন তখন লোকেরা তাঁর নিকট যেতে লাগলো এবং বলাবলি হতে লাগলো- আল্লাহর রাসুল এসেছেন, আল্লাহর রাসুল এসেছেন,আল্লাহর রাসুল এসেছেন (তিনবার)। আমিও লোকজনের সাথে (তাঁকে) দেখতে গেলাম। আমি তাঁর মুখমণ্ডল উত্তমরূপে দেখার পর বুঝতে পারলাম যে, এই চেহারা মিথ্যাবাদীর নয়। সর্বপ্রথম তাঁর মুখে আমার শোনা কথা এই যে, তিনি বললেন: হে লোকসকল! তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচলন করো, আহার করাও, আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখো এবং লোকজন যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন রাতের বেলা নামায পড়ো।
-(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩২৫১)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
১. হাদিসের বাক্য “ তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচলন করো” এর অর্থ হচ্ছে- ‘মুসলমানদের মাঝে “আসসালামু আলাইকুম” বলার প্রচলন করো। কারণ সালাম শুধু একটি শুভেচ্ছা নয়; বরং এটি দোয়া, ভালোবাসা, নিরাপত্তা ও ভ্রাতৃত্বেরও প্রতীক। পবিত্র কোরআনের সুরা নূরের ৬১ নং আয়াতেও সালাম দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে।কেননা সালামের প্রভাব ব্যাপক। সালাম মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ কমায়, ভ্রাতৃত্ব দৃঢ় করে, সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করে।
অর্থাৎ: “রাতের শেষ প্রহরে বান্দা তার রবের সবচেয়ে নিকটে থাকে।” (তিরমিযী)
রাতের নামাজের প্রভাব: রাতের নীরবতায় ইবাদত বান্দাকে আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর প্রতি খাঁটি ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়।
৫. হাদিসের বাক্য “শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করো” এর অর্থ হচ্ছে- পূর্বের চারটি কাজ অর্থাৎ- ১. সালামের প্রসার, ২. আহার করানো,
৩. আত্মীয়তার সম্পর্ক, ৪. রাতের নামায। এই সবগুলো একত্রিত হলে মানুষ একদিকে সমাজে শান্তি আনে, অন্যদিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে। আর শেষ পুরস্কার হলো জান্নাত।
এই হাদিস আসলে ইসলামের সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিককে সমন্বিত করে। সমাজে শান্তি, মানবসেবা, পারিবারিক বন্ধন এবং ব্যক্তিগত ইবাদত। এই চার ভিত্তির উপর গড়ে ওঠে একজন পূর্ণাঙ্গ মুসলমানের জীবন। আর এ জীবনধারাই জান্নাতের নিশ্চয়তা দেয়।