আমাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা প্রাথমিকভাবে চোখে পড়ে না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এই ঘাটতি বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, আয়রনের অভাব রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) তৈরি করে, যা শরীরের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই নিচের লক্ষণগুলো দেখলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অস্বাভাবিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা
শুধু কাজের চাপে নয়, যদি প্রতিদিন অল্প কাজেও প্রচণ্ড ক্লান্ত বোধ করেন, তবে সেটি আয়রনের ঘাটতির ইঙ্গিত হতে পারে। শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের ঘাটতির কারণে পেশি ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, ফলে ক্লান্তি আসে।
ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে ত্বক তার স্বাভাবিক লালচে আভা হারিয়ে ফ্যাকাশে দেখায়। বিশেষ করে ঠোঁট, চোখের ভেতরের অংশ ও নখে এটি স্পষ্ট বোঝা যায়।
শ্বাসকষ্ট ও দ্রুত হৃদস্পন্দন
সিঁড়ি ভাঙা বা হাঁটার সময় অতিরিক্ত হাঁপিয়ে যাওয়া কিংবা বুক ধড়ফড় করলে তা আয়রনের ঘাটতির ফল হতে পারে। শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পৌঁছানোয় হৃদপিণ্ড অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য হয়।
মাথা ঘোরা ও মাথাব্যথা
মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পৌঁছালে নিয়মিত মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় এতে মনোযোগ কমে যায় বা ক্লান্তি বেড়ে যায়।
নখ ও চুলের অবস্থা খারাপ হওয়া
আয়রনের অভাবে নখ ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে, চামচের মতো আকৃতি ধারণ করতে পারে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
অদ্ভুত খাবারের প্রতি আগ্রহ(পিকা)
মাটি, কাদা, বরফ, কাগজ ইত্যাদি খাওয়ার ইচ্ছা হলে সেটি হতে পারে পিকার লক্ষণ—যা পুষ্টির ঘাটতির বিশেষ করে আয়রনের ঘাটতির নির্দেশ দেয়।
মনোযোগের অভাব ও একাগ্রতা হ্রাস
আয়রন আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এর অভাবে স্মরণশক্তি কমে, মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে, এমনকি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও প্রভাবিত হয়।এই লক্ষণগুলো নিয়মিত দেখা দিলে দেরি না করে রক্ত পরীক্ষা করে আয়রনের মাত্রা জানানো এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ডায়েট বা চিকিৎসা শুরু করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ..