ফ্রান্সে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী দুই দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করেছে দেশটির সরকার। এ অভিযানের লক্ষ্য সীমান্তে অবৈধ প্রবেশ ঠেকানো, মানব পাচারকারীদের চিহ্নিত করা এবং অনুপ্রবেশকারীদের আটকের মাধ্যমে দায়বদ্ধতার আওতায় আনা।
ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডানপন্থি লে রিপাবলিকান (এলআর) দলের নেতা ব্রুনো রোতাইয়ো জানান, অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ফ্রান্সজুড়ে ট্রেন স্টেশন ও বাস টার্মিনালে বুধবার ও বৃহস্পতিবার (১৮ ও ১৯ জুন) টানা দুই দিন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই অভিযানে পুলিশ, সীমান্ত রক্ষী, জন্দারমেরি, শুল্ক কর্মকর্তাসহ মোট ৪ হাজার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।উত্তর ফ্রান্সের ক্যালেই ও ডাংকার্ক অঞ্চলের নদীতীর, সড়ক ও সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে ইংলিশ চ্যানেল হয়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার প্রবণতা ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাম্প্রতিক একদিনে এক হাজারেরও বেশি অভিবাসী এই চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন।ফরাসি সরকারের এই বিশেষ অভিযান ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত আইন অনুসারে পরিচালিত হচ্ছে।অভিযানে অনুপ্রবেশকারীদের উদ্ধার ও আটকের পাশাপাশি মানবিক ও নিরাপত্তাজনিত বিষয়েও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।গতকাল বুধবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো প্যারিসের গার দ্যু নর্দ ট্রেন স্টেশনের অভিযান সরজমিনে পরিদর্শন করেন। এই এলাকায় দক্ষিণ এশীয় বিশেষ করে বাংলাদেশি ও শ্রীলঙ্কান অভিবাসীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিটেন থেকে আগত ইউরোস্টার ট্রেনগুলোও এই স্টেশনেই থামে, যা নজরদারির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, দেশের বড় শহরগুলো এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত রেলপথ ও যানবাহন চলাচলে বাড়তি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, এর আগেও গত ২০ ও ২১ মে অনুষ্ঠিত এক জাতীয় অভিযানে ৭৫০ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে আটক করা হয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অভিবাসী আটকের হার ২৮ শতাংশ বেড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।ব্রুনো রোতাইয়ো বলেন, “যারা অনিয়মিতভাবে ফ্রান্সে প্রবেশ করেছেন, তারা এখানে গ্রহণযোগ্য নন। সীমান্তে আরো কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে এবং বিশেষ ‘সীমান্ত ফোর্স’ মোতায়েন রয়েছে।প্রসঙ্গত, রোতাইয়ো সম্প্রতি ফ্রান্সের অন্যতম রক্ষণশীল দল এলআর–এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন এবং ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।