“وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا‘আল্লাহ বেচাকেনা হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।’ (সুরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৭৫)
এ আয়াত প্রমাণ করে যে, ইসলাম ব্যবসা-বাণিজ্যকে স্বীকৃতি দিলেও তার চরিত্রকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। হালালকে গ্রহণ করা ও হারামকে বর্জন করা শুধু ধর্মীয় কর্তব্য নয়; বরং তা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের অন্যতম শর্ত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
طَلَبُ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ‘হালাল উপার্জন করা প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ।
আবার সহিহ মুসলিমে এসেছে,
يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ
‘এক ব্যক্তি দীর্ঘ সফরে ধূলিধূসরিত চুল এলোমেলো অবস্থায় আল্লাহকে ডাকছে: ‘হে আমার রব! হে আমার রব!’ অথচ তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম, এবং হারাম দ্বারা তার দেহ গঠিত। তাহলে কীভাবে তার দোয়া কবুল হবে?’ (সহিহ মুসলিম, কিতাবুল যাকাত, হাদিস: ১০১৫)
মুসলিম সমাজের প্রতিটি সদ্যস্য উপার্জনের প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে হালাল উপার্জনের প্রতিই যত্নবান হবেন এটাই বিধিবদ্ধ নিয়ম। এ ছাড়া হালাল উপার্জন তাকওয়ারও অংশ। এটি শুধু ব্যক্তিগত ইবাদত নয়; বরং সামাজিক স্থিতি ও আস্থারও ভিত্তি।
আজকের বিশ্বায়নের যুগে হালাল-হারামের এই সীমারেখা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ, আধুনিক অর্থনীতি বহুমাত্রিক জটিলতায় ভরা।
হারাম থেকে সতর্ক করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
كُلُّ جَسَدٍ نَبَتَ مِنْ سُحْتٍ فَالنَّارُ أَوْلَى بِهِ
‘যে দেহ হারাম দ্বারা গঠিত, আগুনই তার জন্য অধিক উপযুক্ত।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ১৪২১৮, হাদিসটি সহিহ)
অতএব মুসলিম সমাজকে হালাল উপার্জনের ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। যেনো উপার্জন, খরচ ও বিনিয়োগের প্রতিটি ধাপে হালাল-হারামের সীমারেখা অটুট থাকে। কারণ, অর্থনীতি শুধু টাকার হিসাব নয়, বরং তা ঈমান, নৈতিকতা ও আখিরাতের সাফল্যের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
মহান আল্লাহ আমাদের হালাল ও হারামের সীমারেখা অটুট রেখে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।