হাদিসের ব্যাখ্যা
১. আল্লাহ সম্পর্কে বান্দার ধারণা: যেমন তার সঙ্গে আচরণও করা হয় তেমন। আল্লাহ বলেন: “আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে।” এর অর্থ হলো— যদি বান্দা আল্লাহ্র প্রতি সুস্থ ধারণা (حسن الظن بالله – হুসনুজ-যন্ বিল্লাহ) রাখে, অর্থাৎ বান্দা যদি ধারণা রাখে যে, আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করবেন, আমার দোয়া কবুল করবেন, দয়া করবেন, হিদায়াত দিবেন। তাহলে আল্লাহ তার সঙ্গে সেই ধারণা অনুযায়ী অনুগ্রহই করবেন।আর যদি বান্দা খারাপ ধারণা রাখে (যেমন—আল্লাহ আমাকে কখনো ক্ষমা করবেন না, আমার দোয়া কবুল হবে না), তবে আল্লাহ তার সেই ধারণাকেই সত্য করে দেন। তাই মুমিনের জন্য আবশ্যক হলো সবসময় আল্লাহর প্রতি আশাবাদী হওয়া, হতাশ না হওয়া।
৩. বান্দার ছোট্ট প্রচেষ্টার বিপরীতে আল্লাহর অশেষ দয়া: হাদিসে বলা হয়েছে: “বান্দা যদি এক বিঘত (অল্প দূরত্ব) আল্লাহর দিকে এগোয়, আল্লাহ এক হাত এগিয়ে আসেন, বান্দা যদি এক হাত এগোয়, আল্লাহ দু’ হাত এগিয়ে আসেন, আর বান্দা যদি হেঁটে আসে, আল্লাহ তার দিকে দৌড়ে যা।” এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, বান্দার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আমলকেও আল্লাহ্ অনেক বড় করে গ্রহণ করেন এবং অশেষ দয়া দিয়ে পুরস্কৃত করেন। বান্দা যতটুকু চেষ্টা করে, আল্লাহ্ তার চেয়ে বহুগুণ বেশি দয়া ও অনুগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসেন।
হাদিসের মূল শিক্ষা :
* আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা রাখা ঈমানের অংশ।
* হতাশা হারাম; কারণ হতাশা মানে আল্লাহর রহমতকে সীমিত ভেবে নেওয়া।
* আল্লাহর জিকির একান্তে ও জনসম্মুখে—উভয় ক্ষেত্রেই কল্যাণকর, তবে প্রকাশ্যে করলে তা অন্যদের জন্যও দৃষ্টান্ত হয়।
* বান্দা সামান্য উদ্যোগ নিলেই আল্লাহ তার প্রতি দ্বিগুণ, তিনগুণ, বহুগুণ দয়া করেন।
এ হাদীস বান্দাকে আল্লাহর দিকে ফেরার, আমল বাড়ানোর এবং তাঁর রহমতের আশায় অটল থাকার এক বিশাল প্রেরণা।পবিত্র কোরআনে বলা হযেছে-“তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করেন।” (সুরা যুমার, আয়াত : ৫৩)