চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ১০টার পর বাইরে থাকলে ছাত্রীদের সিট বাতিলের হুমকি দিয়েছে সহকারী প্রক্টরিয়াল টিম। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শুধু মেয়েদের জন্য এ নিয়ম বৈষম্যমূলক ও স্বৈরাচারী।বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে জুলাই বিপ্লব উদ্যান ও লেডিস ঝুপড়ি এলাকায় প্রক্টরিয়াল বডি ছাত্রীদের এ হুমকি দেন।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজয় ২৪ হলের এক ছাত্রী বলেন, ‘আমি হলে ফিরছিলাম, তখন সহকারী প্রক্টর গাড়ি থেকে নেমে বলেন—সব মেয়েরা যেন রাত ১০টার মধ্যে হলে ফিরে যায়।কেউ ১০টা ১ মিনিটেও বাইরে থাকলে সিট বাতিল হবে। এরপর খাতা-কলম বের করে আমাকে সিট বাতিলের হুমকি দেন।’তিনি আরো জানান, ‘বিপ্লবী উদ্যানে কিছু মেয়ে বসে ছিল। সহকারী প্রক্টর তাদেরও সেখান থেকে উঠিয়ে দেন।সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসেইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। নিয়ম অনুযায়ী, আবাসিকদের ১০টার মধ্যে হলে ঢুকতে হয়। আমরা শিক্ষার্থীদের এই বার্তা দিচ্ছি, কারণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও প্রস্তুতি নিচ্ছে।’বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহ-সমন্বয়ক সুমাইয়া সিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কিছুদিন আগেও প্রীতিলতা হলে সান্ধ্য আইন জারি হয়েছিল।তখন আমরা প্রতিবাদ করি। গতকাল সহকারী প্রক্টর লেডিস ঝুপড়ি ও বিপ্লবী উদ্যানে মেয়েদের ১০টার পর বাইরে না থাকার নির্দেশ দেন। কয়েকজন মেয়েকে উঠিয়ে দেওয়া হয়।’তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের নারীবিদ্বেষী ও স্বৈরাচারী আচরণ আমরা আগে থেকেই দেখে আসছি। শুধু মেয়েদের জন্য সান্ধ্য আইন কেন থাকবে? আমরা প্রতিবাদ করব এবং প্রয়োজনে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।বিজয় ২৪ হলের প্রভোস্ট জান্নাত আরা পারভীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মেয়েদের হলে ১০টার মধ্যে ঢোকা স্বাভাবিক। কেউ দেরি করলে লিখিতভাবে জানাতে হবে। কেউ যদি রাত ২টা-৩টায় আসে, তাহলে তো শৃঙ্খলা থাকবে না। কেউ ইচ্ছাকৃত দেরি করে ঢুকবে, তাহলে তো তারা ভালো ছাত্রী না। তাদের হলে থাকার দরকার কী? সাংবাদিকরা এসব শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলে তাদের আরো খারাপ করে ফেলেন।’প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এখনো প্রশাসন বা হল থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। সহকারী প্রক্টর অন্ধকার জায়গায় না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। ১০টার পর বাইরে থাকতে হলে হলের অনুমতি লাগবে। শহীদ মিনার বা হলের সামনে বসলে সমস্যা নেই। মূলত নিরাপত্তার জন্য বলা হয়েছে।’