عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ قَالَتْ لَمَّا جَاءَ نَعْيُ أَبِي سُفْيَانَ مِنْ الشَّأْمِ دَعَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ بِصُفْرَةٍ فِي الْيَوْمِ الثَّالِثِ فَمَسَحَتْ عَارِضَيْهَا وَذِرَاعَيْهَا وَقَالَتْ إِنِّي كُنْتُ عَنْ هَذَا لَغَنِيَّةً لَوْلاَ أَنِّي سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثٍ إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ فَإِنَّهَا تُحِدُّ عَلَيْهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا
‘যায়নাব বিনত আবূ সালামাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন সিরিয়া হতে আবূ সুফ্ইয়্যান (রাঃ)-এর মৃত্যুর খবর পৌঁছল, তার তৃতীয় দিবসে উম্মু হাবীবাহ (রাযি.) হলুদ বর্ণের সুগন্ধি আনয়ন করলেন এবং তাঁর উভয় গন্ড ও বাহুতে মথিত করলেন। অতঃপর বললেন, অবশ্য আমার এর কোনো প্রয়োজন ছিল না, যদি আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে না শুনতাম যে, স্ত্রীলোক আল্লাহ্ এবং কিয়ামতের দিবসের প্রতি ঈমান রাখে তার পক্ষে স্বামী ব্যতীত অন্য কোনো মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশি শোক পালন করা বৈধ নয়। অবশ্য স্বামীর জন্য সে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে।(বুখারি, হাদিস : ১২৮০; মুসলিম, হাদিস : ৩৫৯১)
…وَإِبْرَاهِيمُ يَجُودُ بِنَفْسِهِ فَجَعَلَتْ عَيْنَا رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَذْرِفَانِ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ عَوْفٍ وَأَنْتَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا ابْنَ عَوْفٍ إِنَّهَا رَحْمَةٌ ثُمَّ أَتْبَعَهَا بِأُخْرَى فَقَالَ إِنَّ الْعَيْنَ تَدْمَعُ وَالْقَلْبَ يَحْزَنُ وَلاَ نَقُولُ إِلاَّ مَا يَرْضَى رَبُّنَا وَإِنَّا بِفِرَاقِكَ يَا إِبْرَاهِيمُ لَمَحْزُونُونَ
‘…তখন ইবরাহিম (রা.) মুমূর্ষু অবস্থায়। এতে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর উভয় চক্ষু হতে অশ্রু ঝরতে লাগল। তখন আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আর আপনিও? (ক্রন্দন করছেন?) তখন তিনি বললেন, অশ্রু প্রবাহিত হয় আর হৃদয় হয় ব্যথিত।
তবে শোক পালনের নামে অতিরঞ্জিত কাজকে ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশেষ করে শোক পালনের যেসব ধরন জাহেলি যুগের কুপ্রথা থেকে এসেছে। যেগুলো অন্য ধর্মের প্রথার সাদৃশ ধারণ করে এবং যেগুলো মূলত শোক নয় বরং বিভিন্ন কুসংস্কারের চিহ্ন বহন করে।
لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُودَ وَشَقَّ الْجُيُوبَ وَدَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ
‘যারা শোকে গালে চাপড়ায়, জামার বুক ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহেলি যুগের মতো চিৎকার দেয়, তারা আমাদের তরিকাভুক্ত নয়।
’ (বুখারি, হাদিস : ১২৯৮)
ইদ্দতের সময় সাজসজ্জা করা নিষিদ্ধ
উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে,
أَنَّ امْرَأَةً تُوُفِّيَ زَوْجُهَا فَخَشُوا عَلٰى عَيْنَيْهَا فَأَتَوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَأْذَنُوه“ فِي الْكُحْلِ فَقَالَ لاَ تَكَحَّلْ قَدْ كَانَتْ إِحْدَاكُنَّ تَمْكُثُ فِي شَرِّ أَحْلاَسِهَا أَوْ شَرِّ بَيْتِهَا فَإِذَا كَانَ حَوْلٌ فَمَرَّ كَلْبٌ رَمَتْ بِبَعَرَةٍ فَلاَ حَتّٰى تَمْضِيَ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ وَعَشْرٌ.
‘একজন নারীর স্বামী মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারের লোকেরা তার আঁখিযুগল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করল। তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে তার সুরমা ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করল। তিনি বললেন, সুরমা ব্যবহার করতে পারবে না। তোমাদের অনেকেই (জাহেলি যুগে) তার নিকৃষ্ট কাপড় বা নিকৃষ্ট ঘরে অবস্থান করত। যখন এক বছর অতিক্রান্ত হতো আর কোনো কুকুর সেদিকে যেত, তখন সে বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। কাজেই চার মাস ১০ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত সুরমা ব্যবহার করতে পারবে না। (বুখারি, হাদিস : ৫৩৩৮)
মুর্দা খাবারের আয়োজন করা
প্রচলিত নিয়মে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে দাওয়াতের আয়োজন করা। সাহাবায়ে কিরামের যুগ থেকেই এটিকে নিষিদ্ধ ও মন্দ কাজ গণ্য করা হতো।
عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْبَجَلِيِّ قَالَ كُنَّا نَرَى الِاجْتِمَاعَ إِلَى أَهْلِ الْمَيِّتِ وَصَنْعَةَ الطَّعَامِ مِنْ النِّيَاحَةِ.
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা মৃতের দাফন কার্য শেষ হওয়ার পর তার বাড়িতে একত্র হওয়া এবং (আগতদের জন্য) খাবারের আয়োজন করাকে নিয়াহা (নিষিদ্ধ পন্থায় শোক পালন)-এর অন্তর্ভুক্ত গণ্য করতাম। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৬৯০৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬১২)
তাই মুমিনের উচিত, মৃত প্রিয়জনদের জন্য শোক পালন কোরআন-হাদিসের সীমারেখা স্মরণ রাখা। মৃত ব্যক্তির উপকার হয়, এমন আমল করা।